পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আদালতের আদেশের পরদিনই ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে রাস্তায় নামলেন রিকশাচালকরা।
ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশের প্রতিবাদে ঢাকার দয়াগঞ্জ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শতাধিক রিকশাচালক।
বুধবার প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জমায়েতের পর তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।
একপর্যায়ে সাড়ে ১২টার দিকে রিকশাচালকরা সড়ক ছেড়ে দিলে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার কপিল দেব গাইন জানান।
তিনি বলেন, “সকাল ৯টা থেকেই দয়াগঞ্জ এলাকায় রিকশাচালকরা জমায়েত হতে থাকে। পরে সাড়ে ১১ টার দিকে তারা রাস্তা বন্ধ করে দিলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।”
“এ সময় তাদেরকে সড়ক ছেড়ে দিতে বললে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তাদের হামলায় ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্টসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত সার্জেন্ট বর্তমানে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতি করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট।
আদালত বলে, “ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এটা পুরোপুরি অবৈধ।”
এর পরদিনই ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করলেন রিকশাচালকরা।
এদিকে, রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বুধবার এক বিবৃতিতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
সেইসঙ্গে আদালতকে ব্যবহার করে শ্রমিকের জীবিকা ধ্বংস না করা ও শ্রমিকদের প্রতিপক্ষ না বানানোর আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে লিপন বলেন, “ঢাকা মহানগরের সর্বত্র গণপরিবহন না থাকায় প্রধান সড়ক বাদে বাকি এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র অবলম্বন রিকশা, ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক। ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও পরিবেশবান্ধব এবং চালকের প্যাডেল চালনার কষ্ট লাঘব হওয়ায় এ পরিবহনের চাহিদা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে।”
‘দুর্ঘটনার দায়ে ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইককে অভিযুক্ত করা হচ্ছে’ কিন্তু দুর্ঘটনার কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে কি-না, এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, “ঢাকা মহানগরে বর্তমানে প্রায় ৭/৮ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করে। এই পরিবহন বন্ধ হলে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ এক ধাক্কায় বেকার হয়ে পড়বে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে চালক ও তাদের উপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।”