দরিদ্র মানুষের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবি

দরিদ্র মানুষের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র মানুষ তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে দুই দিনের জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশে এই দাবি তুলে ধরা হয়।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা ভুক্তভোগীদের প্রতিনিধিরা বলেন, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৮) জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। ক্ষতিপূরণ প্রদানের ক্ষেত্রে সমবণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।

কপ-২৮ উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনের এই আলোচনায় দেশি-বিদেশি ৯ শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। আজ শনিবার বিকেল ৩টায় ঘোষণাপত্র গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই সমাবেশ শেষ হবে। সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে কম দায়ীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে।

আবার যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, জলবায়ু অভিযোজনে তারাই সবচেয়ে কম সক্ষমতাসম্পন্ন। তাই এই সংকট মোকাবেলায় জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণে ধনী দেশগুলোকে বাধ্য করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘বর্তমানের যে জলবায়ু সংকট, তা মানবসৃষ্ট।

নানাভাবে আমরা পরিবেশকে নষ্ট করছি। সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলো বিভিন্ন লাভজনক প্রকল্পের আওতায় এনে প্রতিনিয়ত তা ধ্বংস করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছি। এই সমাবেশ থেকে নিজেদের করণীয় খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু সংকটের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোকে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে বাধ্য করতে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল বলেন, ‘বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি গতিতে জলবায়ু পরিবর্তন সংঘটিত হচ্ছে। আমাদের পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ধনী দেশগুলো ক্রমাগত কার্বন নিঃসরণের ফলে তা আপাতদৃষ্টিতে প্রায় অসম্ভব। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিউট্রাল হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের ধারেকাছেও নেই আমরা। আগামী দু-তিনটি বছর আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে ধনী দেশগুলোকে বাধ্য করতে হবে।’

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব শরীফ জামিল বলেন, ‘ভ্রান্ত উন্নয়ন নীতির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার প্রতি চরম অবহেলার সংস্কৃতি তৈরি করছি। এ অবস্থায় এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলকে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চাচ্ছি, যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষোভ ও দুর্দশার কথা তুলে ধরবে।’ ভবিষ্যতের অপ্রত্যাশিত আসন্ন সংকট প্রতিহত করতে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *