পাথেয় রিপোর্ট : নারায়ণগঞ্জের শিল্পাঞ্চল খ্যাত রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন কাঁচাবাজারে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নবনির্মিত কাঁচাবাজার ভবনে গড়ে উঠেছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে এলাকায় খ্যাতি ছড়িয়েছে এই ভবনের। এক বছর আগে নির্মাণ শেষ হলেও ভবনটির উদ্বোধন করা হয়নি। ফলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে অবাধে মাদক কেনা-বেচা ও সেবন চলে।
কাঁচাবাজারের নবনির্মিত ওই ভবনটি এখন ‘মাদকের হাট’ নামে পরিচিত। ভবনটির নির্মাণকারী কাঞ্চন পৌর কর্তৃপক্ষ মাদক বেচা-কেনার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে মাদকসেবীর সংখ্যা এখন কম বলে তাদের দাবি। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে গত বছরের ১০ নভেম্বর দ্বিতল ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (বিএমডিএফ) অর্থায়নে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটির নিচতলায় দশটি দোকান ও কাঁচামালের চারটি প্লাটফর্ম এবং দ্বিতীয়তলায় নয়টি দোকান ও দুটি স্টোরসহ মাছ-মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে।
জানা গেছে, ৩০ বছর আগে গড়ে ওঠা কাঞ্চনবাজারের বিভিন্ন গলিতে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্যসামগ্রীর দোকান। মাছ, তরকারি, মুদি-মনোহরি, কাপড়-চোপড় এক জায়গায় পাওয়ায় বাজারটি খুবই জনপ্রিয়।আশপাশের প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ এখানে বাজার করতে আসেন।
কিন্তু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নানা অবহেলায় এক সময়ের সেরা বাজারটি ঐতিহ্য ও গুরুত্ব হারাতে বসেছে। দিনে দিনে ব্যাপক হারে ক্রেতা কমায় মোটা অংকের লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের। এই বাজারের সার্বিক উন্নয়নের দিকে কোন গুরুত্ব নেই কমিটি বা কর্তৃপক্ষের।
বাজারের দোকানদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা যায়, তিন বছর আগে এ বাজারের মাছ, তরকারি, শুঁটকিসহ কাঁচাবাজারের জন্য ভবনটি তৈরির উদ্যোগ নেয় কাঞ্চন পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এরপর বাজারটিকে অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নদীর তীরবর্তী অংশে বসানো হয়। কিন্তু নির্মাণের এক বছর পরও ভবনটি উদ্বোধন না করায় ক্রেতাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে তারা অন্য বাজারগুলোতে চলে যাচ্ছেন। এই বাজার হচ্ছে ক্রেতা শুন্য।
বর্তমানে বাজারটি খোলা আকাশের নিচে হওয়ায় সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যবসায়ীদের পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত বেচা-কেনা চললেও এখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে ব্যবসায়ীদের প্রায় সময়ই গুণতে হয় মোটা অংকের লোকসান।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, লোকালয় কম থাকায় ভবনটিতে রাত-দিন সমানে চলে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের আসর। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকেই জমে ওঠে মাদকের হাট। এদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পান না।
এ ঘটনায় ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শহিদুল আলম বলেন, ‘এ ধরনের বিষয় আমার জানা ছিলো না। আমি এখন থেকেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’