দু’বছরেও শুরু হয়নি বিচার : আজাদ হত্যা

দু’বছরেও শুরু হয়নি বিচার : আজাদ হত্যা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি : জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একে আজাদ হত্যার দুই বছর পার হলেও বিচার শুরু হয়নি। একই সঙ্গে আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে বাইরে থাকায় শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন নিহতের স্বজনরা। ২০১৬ সালের ৪ জুন রাতে বাড়ি থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে চেয়ারম্যান আজাদকে গুলি ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা। প্রথমে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকার পপুলার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ জুন রাতে তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, একে আজাদকে গুলি করার রাতেই জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশ তড়িঘড়ি করে চেয়ারম্যানের ছোট ভাই এনামুল হোসেন কাস্মিরকে দিয়ে মামলা করায়। ওই রাতে সৈকতসহ তিজনকে এবং পরে সোহেল, হাকিম ও সাদ্দাম মনিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখনও পলাতক নাজিম, আলীমসহ কয়েকজন। এরপর ১৩ জুন রাতে সোহেল ও মনির ক্রসফায়ারে নিহত হন। সৈকত, হাকিম ও সাদ্দাম আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীসহ বিস্তারিত জবানবন্দি দেন। পরবর্তীতে র‌্যাব-১ ঢাকার তুরাগ এলাকা থেকে মুন্না পারভেজকে গ্রেফতার করে। সেখানে জবানবন্দিতে মুন্না জানান, চেয়ারম্যান হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ভাদসা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী। তিনি দুই লাখ টাকার বিনিময়ে আসামিদের দিয়ে চেয়ারম্যানকে হত্যা করান। মুন্না বর্তমানে জয়পুরহাট জেলাখানায় বন্দি আছে।

মামলার বাদী এনামুল হক জানান, তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে দিয়ে মামলায় সই করায় পুলিশ। মামলায় কাকে আসামি করা হবে তা নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনাও করা হয়নি। নিহতের বড় ভাই আবদুল হাই জানান, আজাদের চিকিৎসা নিয়ে যখন তারা ব্যস্ত তখন পুলিশ তার ছোট ভাইকে দিয়ে মামলা করিয়েছে। মামলায় মূল আসামিদের বাদ দেওয়া হয়েছে। মূল আসামিদের ধরা হচ্ছে না। আসামিদের ধরার ব্যাপারে শুরু থেকেই পুলিশের গড়িমসি লক্ষ্য করা গেছে। ধরাপড়া আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে তাদের হুমকি দিচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সোলাইমান আলী জানান, সমস্ত সাক্ষী-প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আজাদ হত্যার সঙ্গে জড়িতরা গ্রেফতার হচ্ছে না। মূল আসামিদের বাঁচাতে একটি পক্ষ কাজ করছে। দুই বছরেও একটি হত্যার বিচার শুরু হবে না, এটি রহস্যজনক।

পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান জানান, মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাই অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে। সিআইডি মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। এদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী নৃপেন্দ্রনাথ ম-ল জানান, মামলাটির বিচারকাজ এখনও শুরু হয়নি। বিচারকাজ শুরু হলে মূল আসামিরা শাস্তি পাবে এবং ভুক্তভোগীর পরিবার ন্যায়বিচার পাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *