দুবাই থেকে ১০ দিনে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে আমদানি পণ্য

দুবাই থেকে ১০ দিনে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে আমদানি পণ্য

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেবেল আলী বন্দরে সরাসরি কনটেইনার জাহাজ সার্ভিস চালু হয়েছে। নতুন সার্ভিসের ফলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রপ্তানি পণ্য ১৫ দিনে জেবেল আলী বন্দরে এবং সেখান থেকে ১০ দিনে চট্টগ্রামে আনার সুযোগ পাবেন ব্যবসায়ীরা। এতে সময়, অর্থ দুটিই সাশ্রয় হবে।

মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের হাব হলেও দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে কোনো জাহাজ সার্ভিস চালু ছিল না। এর ফলে দুবাই ও আবুধাবিভিত্তিক আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন করা হতো বিভিন্ন ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর দিয়ে। এতে বাড়তি সময় লাগত এবং ভাড়াও বেশি হতো।

ফ্রান্সভিত্তিক শিপিং কম্পানি ‘সিএমএ-সিজিএম’ চট্টগ্রাম বন্দর থেকেই সরাসরি জেবেল আলী বন্দরে এই কনটেইনার জাহাজ সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য ‘হং এন’ জাহাজটি গত ৫ মে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটিতে ভিড়েছে। পণ্য বোঝাই করে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ দুবাইয়ের জেবেল আলী বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে আগামী ৭ মে।

প্রসঙ্গত, ব্যাবসায়িক সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে চট্টগ্রাম-আবুধাবি রুটে সর্বপ্রথম কনটেইনার জাহাজ সার্ভিস চালুর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশি বন্দর অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক। এখন সাইফ পাওয়ারটেককে বাদ দিয়ে সরাসরি সিএমএ-সিজিএম নিজেই সার্ভিস চালু করে দিল।

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশে এই সার্ভিস পরিচালনাকারী এপিএল শিপিং লাইনের চট্টগ্রামের প্রধান এনাম টিটুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি। বিশ্বজুড়ে সিএমএ-সিজিএম শিপিং লাইনের সঙ্গে মার্জ হয়ে গেছে এপিএল শিপিং। কিন্তু বাংলাদেশে যেহেতু শিপিং কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স এপিএলের নামে, তাই এখানে এপিএল লাইন সার্ভিস পরিচালনা করছে।

কেন্দ্রীয়ভাবে সিএমএ-সিজিএম কর্তৃপক্ষ বলেছে, নতুন সার্ভিসে আরব আমিরাত থেকে আমদানিতে বড় সুফল আনবে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের। একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ভারতের মুন্দ্রা, নভোসেবা বন্দর হয়ে রপ্তানি পণ্য ভারতের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে।

আরব আমিরাতে ড্রাই ফুডের ট্রেডিং ব্যবসা করেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী অসীম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অসীম কুমার দাশ। তিনি বলেন, ‘আগে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হয়ে জেবেল আলী থেকে চট্টগ্রামে পণ্য পাঠাতে ৩০-৩৫ দিন সময় লাগত। আর ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরে জট লেগে অবস্থা আরো কঠিন হতো। এখন ১১ থেকে ১৭ দিনে চট্টগ্রামে পণ্য পৌঁছানোর খবর আমরা পেয়েছি। আমদানির ক্ষেত্রে এটি বড় সুফল অর্থাৎ ১০-১৫ দিন সাশ্রয় হবে। ভাড়া একটু বেশি হলেও সময় ও ভোগান্তি কমে আমদানিতে সুফল আসবে।’

উদ্যোক্তারা এই সার্ভিসটির নাম দিয়েছেন ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া গালফ এক্সপ্রেস’ অর্থাৎ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তিনটি সমুদ্রবন্দর এবং আরব আমিরাতের দুটি বন্দরের সঙ্গে এই সার্ভিস পরস্পরকে সংযুক্ত করবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা দিয়ে প্রথমে কলম্বো বন্দরে, এরপর ম্যাঙ্গালোর বন্দর, সেখান থেকে নভোসেবা বন্দর হয়ে মুন্দ্রা বন্দরে পৌঁছাবে। সেখান থেকে সরাসরি চলে যাবে জেবেল আলী বন্দরে, এরপর আবুধাবির খালিফা বন্দরে। এতে সময় লাগবে ১৫ দিন।

তবে একাধিক শিপিং কম্পানি বলেছে, নতুন এই সার্ভিসে আমদানিকারকদের বেশি সুবিধা হবে কিন্তু রপ্তানির ক্ষেত্রে এটাকে কোনোভাবেই সরাসরি সার্ভিস বলা যাবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *