পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরেই মূল্যস্ফীতির হার কমতে শুরু করবে। ডিসেম্বরে এ হার কমে ৮ শতাংশে নামতে পারে। চলতি অর্থবছরের শেষ দিকে তা ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
এছাড়া দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে এ চাপও কমে আসবে।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নেতাদের সঙ্গে সোমবার দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, আমি অর্থ মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সময় কিভাবে টুইন ডেফিসিট (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ও ফিসক্যাল ডেফিসিট) ম্যানেজ করতে হয় শিখেছি।
কিন্তু এবার দেখছি ট্রিপল ডেফিসিট (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, ফিসক্যাল এবং ফিনানশিয়াল অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট) যা আমার ৩৬ বছরের সিভিল এবং পাবলিক সার্ভিসে কখনো দেখিনি।
দেশ থেকে টাকা পাচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হুন্ডির চেয়ে ব্যবসার আড়ালে ১০ গুণ বেশি অর্থ পাচার হয়। পাচারের অর্থে দুবাইতে ১৩ হাজার বাংলাদেশি কম্পানি গঠন করেছেন। আর পর্তুগালে আড়াই হাজার কম্পানি গঠন করেছেন বাংলাদেশিরা।
এসব কম্পানি গঠন করা হয়েছে পাচার করা অর্থে। কঠোর তদারকির ফলে এখন তা কমে এসেছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে নতুন করে আর কোনো ঋণ দেওয়া হবে না। নতুন কোনো তহবিলও গঠন করা হবে না। আগে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে বা তহবিল গঠন করা হয়েছে সেগুলো থেকে আদায়ের মাধ্যমে ঋণের স্থিতি বা তহবিলের আকার ছোট করে আনা হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিতি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সলিমুল্লা, ডেপুটি গভর্নর, অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহসহ অন্য নেতারা।
গভর্নর জানান, রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে দেশের অভ্যন্তরে আর কোনো ডলার বিনিয়োগ করা হবে না। এরই মধ্যে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) কমানো হয়েছে। সাড়ে সাত বিলিয়নের ইডিএফ সাড়ে তিন বিলিয়ন করা হয়েছে। পায়রা বন্দরের ঋণ আদায়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে আরো কিছু ডলারের সংস্থান হবে। তখন রিজার্ভ বাড়বে। এজন্য দেশের রিজার্ভ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।