দৈনিক ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে

দৈনিক ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিশ্বজুড়ে যখন চরম জ্বালানি সংকট ঠিক তখন আশার আলো জ্বালিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড। আজ থেকে এই গ্যাস ফিল্ডের পরিত্যক্ত ১ নম্বর কূপ থেকে প্রায় ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন যোগ হবে জাতীয় গ্রিডে। ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৬ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুটে উন্নীত করার প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

এমন সুসংবাদ দিয়েছেন সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, একই ফিল্ডের ২ নম্বর কূপের ৭ লাখ ৭০ হাজার ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।

জানা যায়, ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। ২০১৪ সালে কূপটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে আবার উত্তোলন শুরু হলেও ওই বছরের শেষ দিকে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়। কিছু রক্ষণাবেক্ষণের পর ২০১৭ সালে আরও সাত মাস গ্যাস উত্তোলন করা হয়। এরপর গ্যাস না পাওয়ায় কূপটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ২০২০ সালে এ কূপসহ তিনটি কূপে ওয়ার্ক ওভার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ১০ সেপ্টেম্বর পরিত্যক্ত ১ নম্বর কূপে ওয়ার্ক ওভার কাজ শুরু করে বাপেক্স। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিদিন প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুটের মজুদ পাওয়া যায় ওই কূপে।

শনিবার রাতে বিয়ানীবাজার ১ নম্বর কূপে অবস্থান করে অপারেশন তদারকি করছিলেন সিলেট গ্যাস ফিল্ডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুল জলিল প্রামাণিক। গ্যাসের মজুদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ১ নম্বর কূপ থেকে অতীতে ১০৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছিল। বর্তমানে ওই কূপে আরও প্রায় ৭০ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুত আছে। এই রিজার্ভ অনুযায়ী দৈনিক ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। তবে সার্বিক বিবেচনায় ৮ মিলিয়ন (৮০ লাখ) ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে।

এসজিএফএলের দায়িত্বশীলরা জানান, সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আরও কিছু কাজ চলছে। বিয়ানীবাজারের কূপ ছাড়াও গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা-৮ ও গোয়াইনঘাট-১০ নম্বর কূপ খনন এবং রশিদপুরে একটি পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষে এসজিএফএলের গ্যাস উৎপাদন আরও বাড়বে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীনে আরও কূপ খননের কাজ চলছে। এসব কাজ সম্পন্ন হলে ২০২৩ সালের মধ্যে আরও অনেক গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৬ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুটে দাঁড়াবে।

১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর আবিষ্কৃত হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। এর মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত। বাকিগুলো হল-হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড।

সূত্র : যুগান্তর

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *