ধর্ষণ মামলার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে: আইন উপদেষ্টা

ধর্ষণ মামলার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে: আইন উপদেষ্টা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত এবং ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলার বিচার সম্পন্ন করতে হবে।

রবিবার আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কাজ করছি, কীভাবে ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত করা যায়। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষে করে ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের মামলার বিচার সম্পন্ন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা বন্ধ করতে হবে।’

ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তরা জামিন পাবেন না জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ধর্ষণ মামলায় ৩০ দিনের পরিবর্তে এখন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করতে হবে। নারী সহিংসতা প্রতিরোধে এসব সিদ্ধান্তের আলোকে কয়েকদিনের মধ্যেই আইন সংশোধন করা হবে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আগে ধর্ষণ মামলায় ডিএনএ সার্টিফিকেট লাগত। অনেক এলাকায় ডিএনএ নেওয়ার সুবিধা নেই। শুধু ভিকটিম না অভিযুক্তেরও একটি সার্টিফিকেট লাগত। এজন্য মামলায় দেরি হয়ে যেত, আমরা সংশোধন আনব। শুধু উপযুক্ত ক্ষেত্রে বিচারক যদি মনে করে মেডিকেল সার্টিফিকেটই যথেষ্ট, তাহলে সে ব্যবস্থা তিনি নিতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘মাগুরার মতো অনেক ঘটনাতেই আসামিরা হাতেনাতে ধরা পড়ে। এ সমস্ত ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য সময়ক্ষেপণ রোধ করতে এই পরিবর্তনটা আমরা আনার চেষ্টা করছি।’

প্রতিটি জেলায় ডিএনএ ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে যৌন হয়রানি রুখতে একটি হটলাইন চালু করতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যেটি হবে টোল ফ্রি।এটি তদারকি করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ডেডিকেটেড সেল থাকবে। ধর্ষণ মামলার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ও একটি সেল করবে।’

নারীর প্রতি সহিংসতা কোনোভাবে গ্রহণ করা হবে না জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সুবিচার হবে। ধর্ষণ বন্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে আমরা বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। আইন সংশোধনের বিষয়টি আলোচনা করেছি। সপ্তাহখানেকের মধ্যে একটা ফল পাওয়া যাবে।’

সম্প্রতি মাগুরায় আছিয়া নামে ৮ বছর বয়সি এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষকের দ্রুত বিচারের দাবিতে হয়েছে আন্দোলন।

এই ঘটনায় রবিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্দেশ দেন, শিশু আছিয়া ধর্ষণের মামলার বিচার কাজ ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ‘দেশে ধর্ষকদের কোনো স্থান হবে না। মাগুরার ঘটনায় অভিযুক্ত সবাই ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার।

রবিবার বিকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এর আগে সকালে গিয়ে সিএমএইচে ভর্তি শিশু আছিয়াকে দেখে আসেন তিনি।

Related Articles