ধাক্কা পড়ছে রপ্তানি আয়ে

ধাক্কা পড়ছে রপ্তানি আয়ে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: দেশের রপ্তানি আয়ে সাফল্যের ধারায় ছেদ ঘটল গত অক্টোবর মাসে। এ মাসে রপ্তানি আয় কমায় ধাক্কা লেগেছে চার মাসের হিসাবে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাস জুলাই-অক্টোবরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমে এসেছে মাত্র ৩.৫২ শতাংশে। যেখানে জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯.৫১ শতাংশ।

এক মাসেই রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে ৬ শতাংশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মাসিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর মাসে রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের ধস নামার ফলে প্রথম চার মাসের রপ্তানি আয়ে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তথ্য অনুযায়ী জুলাই-অক্টোবর চার মাসে মোট ১৭.৪৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩.৫২ শতাংশ বেশি এবং কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯.৩১ শতাংশ কম।

আগের বছরে একই সময় রপ্তানি হয়েছিল ১৬.৮৫ বিলিয়ন ডলার।

আগের মাস সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৫১ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২.১৬ শতাংশ কম। জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ১৩.৬৮ বিলিয়ন ডলার। ইপিবি বলেছে, অক্টোবর মাসে রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার ফলে প্রবৃদ্ধি ৯.৫ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ কমে ৩.৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশই তৈরি পোশাক। তথ্য বলছে, অক্টোবর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে আসার ফলে প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের ঝাঁকুনি লেগেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১৬.২২ বিলিয়ন ডলারের। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৯৫ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে ১৪.৭৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮.৮৬ শতাংশ কম।

সেপ্টেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩.০৭ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ছিল মাত্র ১.৫ শতাংশ। তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য বলেছে, অক্টোবর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১৩.৯৩ শতাংশ। আর এর প্রভাব পড়েছে মোট রপ্তানিতে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘সাধারণত দুই মৌসুমের মাঝে অক্টোবর মাসে রপ্তানি কমে। এবার একটু বেশি কমেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে। এরপর ডিসেম্বর থেকে আবার রপ্তানি বাড়বে। তবে এটাও নির্ভর করবে দেশে রাজনৈতিক অবস্থার ওপর। রাজনৈতিক অবস্থা যদি তৈরি পোশাক কারখানা খোলা রাখা বা রপ্তানিকরণের ক্ষেত্রে বাধা হয় তাহলে রপ্তানি বৃদ্ধির যে সম্ভাবনা থাকে সেটা অর্জন করা কঠিন হবে।’

চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর চার মাসে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্যের মধ্যে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি হয়েছে ১৪৫ মিলিয়ন ডলারের, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০.৬৩ শতাংশ কম। কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২৯০ মিলিয়ন ডলারের, আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪.৩৪ শতাংশ কম। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৮৫.৩৩ মিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪.১৪ শতাংশ কম।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩১৯ মিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ শতাংশ কম। একসময়ের প্রধান রপ্তানি পণ্য সোনালি আঁশখ্যাত পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩১৬.৫১ মিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১.২৬ শতাংশ কম। আর হোম টেক্সটাইল রপ্তানিতে আয় আগের বছরের চেয়ে কমেছে ৪৫ শতাংশ। জুলাই-অক্টোবর চার মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৩.২৩ মিলিয়ন ডলারের। এ ছাড়া জুতা রপ্তানি হয়েছে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের এবং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রডাক্ট রপ্তানি হয়েছে ১৯৫.৫০ মিলিয়ন ডলারের।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *