পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে যাবে না। ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করা যাবে না। গাজায় চলমান ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (২১ অক্টোবর) মিসরের কায়রোতে শান্তি সমাবেশে এসব কথা বলেন মাহমুদ আব্বাস। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির।
গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধ এবং হামাসের সঙ্গে সংঘাতকে আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মিসরের কায়রোতে আন্তর্জাতিক শান্তি সমাবেশ হয়েছে।
এতে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ছাড়াও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া, ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওরো ভিয়েইরা, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালিনা বেয়ারবকসহ বিশ্বনেতারা অংশ নেন।
সমাবেশের শুরুতে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করা যাবে না। তিনি বলেন, আমরা আমাদের বেসামরিক নাগরিকদের তাদের বাড়িঘর থেকে বা পশ্চিম তীর বা জেরুজালেম থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করছি।
মাহমুদ আব্বাস আরও বলেন, আমরা এই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতিকে কখনই মেনে নেব না এবং আমাদের জমিতে মাথা উঁচু করেই দাঁড়াবো।
সমাবেশে জাতিসংঘ মহাসচিব অবিলম্বে গাজায় মানবিক বিপর্যয় এড়াতে দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলি সেনারা ওইদিন থেকেই গাজায় অনবরত বিমান থেকে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
একইসঙ্গে খাবার, পানি, গ্যাস-বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ করে গাজাকে পুরো অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। শুধু তাই নয়, গাজায় স্থল হামলারও প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা।
গত সপ্তাহেই গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে সেখানকার ১১ লাখ বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি খালি করে নিরাপদে চলে যাওয়ার সময় বেধে দেওয়া হয়। এতে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, গাজার বাসিন্দাদের জাতিগত উচ্ছেদের পরিকল্পনা নিয়েছে ইহুদি দখলদারিত্ব কায়েম করা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় গত দুই সপ্তাহে সাড়ে চার হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১৩ হাজার।
দিনে রাতে টানা ইসরায়েলি বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে গাজার বেশির ভাগ ঘরবাড়ি। ইসরায়েলি বিমান হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না গাজার হাসপাতাল, গির্জা, জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুল বা আশ্রয়কেন্দ্র কোনোটিই। এতে অন্তত পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বিমান হামলার পাশাপাশি গাজায় খাবার, পানি, গ্যাস-বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। এতে খাদ্য-পানির অভাবে গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিলে গত দুই সপ্তাহে কোনো ত্রাণও ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
সর্বশেষ শনিবার (২১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিসরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মানবিক ত্রাণের ২০টি ট্রাক গাজায় ঢোকার অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। তবে এই ত্রাণ ‘ সাগরে এক ফোটা পানি’ ঢালার মতো বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।