নিত্যপণ্যে ক্রেতাদের হাঁসফাঁস

নিত্যপণ্যে ক্রেতাদের হাঁসফাঁস

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের দাম। বাজার করতে এসে ক্রেতাদের হাঁসফাঁস লেগে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে প্রয়োজনীয় বাজার না করেই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে ক্রেতাদের। গত সপ্তাহে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ গতকাল ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজিই। এতে ভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

ক্রেতারা বলছে, সরকার নিত্যপণ্যে দাম সহনীয়পর্যায়ে রাখতে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলেও আদতে তা কোনো কাজে আসছে না। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। কিন্তু আমাদের বেতন তো সেভাবে বাড়ছে না। খাবারের তালিকা ছোট করতে করতে এখন সংসার চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকার পাইকারি থেকে খুচরা বাজার পর্যায়ে তদারকিতে জোর দিলে সামনে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। গত সপ্তাহেও যে আলু বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকায়। প্রতি কেজি দেশী রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ টাকা, চায়না আদা ৩০০ টাকা, ভারতীয় আদা ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। পাড়া-মহল্লার দোকানে ৫২ টাকা হালিও বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা।

সবজির বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ঝিঙে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুরলতি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৭০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ১০০ টাকা, পটোল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ঢেড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, কচুরমুখি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা ও কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৩২০থ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এমন কোনো সবজি নেই যার দাম বাড়তি নয়, এত দাম হলে সাধারণ মানুষ কিভাবে কিনে খাবে? মাছ গোশতের কথা তো বাদই দিলাম, এত দাম দিয়ে সবজি কেনাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। করলা-বরবটির দাম ১৪০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, বেগুন-কাঁকরোল ১০০ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, এখন বেশির ভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। যে কারণে বাজারে সরবরাহ কম। নতুন সবজি ওঠার আগ পর্যন্ত এসবের দাম বাড়তি থাকবে। এ ছাড়া টানা কিছুদিনের বৃষ্টিতে সবজি গাছের ক্ষতি হয়েছে, ফলে বাজারে সরবরাহ কমেছে। আরেকটি দিক হলো কয়েক দিন ধরে টানা ছাত্র আন্দোলনের কারণে যানচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে, ফলে সবজি পরিবহনেও প্রভাব পড়েছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে।

সবজির পাশাপাশি বাজারের সব ধরনের মাছের দাম চড়া। বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা ও শিং প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টেংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে যেটি বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকায়। এ ছাড়াও সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩২০ টাকা, কক প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, লেয়ার প্রতি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের বাড়তি দামেই প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায় এবং খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০০ টাকায়।

Related Articles