পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

পাথেয় রিপোর্ট : যথাযথ ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে আজ ২১ নভম্বের বুধবার উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

হিজরি বর্ষের ১২ রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করা হয়। গত ১০ নভেম্বর থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হয়েছে।

দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- জশনে জুলুস (ধর্মীয় শোভাযাত্রা), আলোচনাসভা, হামদ ও নাতে রাসূল পরিবেশন, কোরআন তেলওয়াত ও মিলাদ মাহফিল।

সারা আরব বিশ্ব যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, তখন মহান আল্লাহ পাক মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বিশ্বজগতের রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন। তিনি ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। এরপর বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। এরপর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দীর্ঘ ২৩ বছর এ বার্তা প্রচার করে ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

বাণী

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে গতকাল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী (সা.)–এর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। দুনিয়ায় তাঁর আগমন ঘটেছিল ‘সিরাজাম মুনিরা’ তথা আলোকোজ্জ্বল প্রদীপরূপে। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহর সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে বলেছেন, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয় নবী (সা.)-এর অনুপম শিক্ষার অনুসরণের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। মহানবী (সা.)–এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর অফুরন্ত কল্যাণ, সফতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।

কর্মসূচি

দিনটি উপলক্ষে সরকারি, আধাসরকারি ভবন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। জাতীয় পতাকা ও ‘কালিমা তায়্যিবা’ লিখিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোস্টে প্রদর্শিত হবে।

রাতে সরকারি ভবন ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় আলোকসজ্জা করা হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।

দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থাগুলোয় আলোচনা সভা ও মাহফিলসহ বিশেষ কর্মসূচি পালন করা হবে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। শিশু একাডেমি শিশুদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

এছাড়া দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধনিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোয় যথাযথভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করা হবে। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মঙ্গলবার থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর সাহানে ইসলামী ক্যালিগ্রাফি, মহানবী (সা.)-এর জীবনীভিত্তিক পোস্টার ও গ্রন্থ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা দেড়টা থেকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।

আশেকানে মাইজভাণ্ডারি অ্যাসোসিয়েশন আজ সকাল ৯টায় রাজধানীর শাহজাহানপুর ঐতিহাসিক রেলওয়ে ময়দানে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান জশনে জুলুছ-২০১৮ এর আয়োজন করেছে। এছাড়া পবিত্র পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ঐতিহাসিক আজিমপুর দায়রা শরিফে খানকা থেকে ১২ দিনব্যাপী মাহফিলের আয়োজন করেছিল।

৯ থেকে ২০ নভেম্বর প্রতিদিন বাদ মাগরিব থেকে এশার নামাজ পর্যন্ত গত ২৬০ বছরের মতো দরবার শরিফে ‘দরূদ সালাম’ ফাতেহাখানি ও মিলাদ শরিফের মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *