পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়াতে চায় ঢাকা ওয়াসা

পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়াতে চায় ঢাকা ওয়াসা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : রাজধানীতে পানির দাম কমপক্ষে ২০ শতাংশ বাড়াতে চায় ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটি বলছে, ভর্তুকি কমাতেই পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান।

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব ২০ শতাংশ, সরকার যদি আরও বাড়াতে চায় তাহলে আমাদের আপত্তি নেই। সরকার যদি ভর্তুকি দেয় তাহলে ওয়াসা পানির দাম বাড়াবে না। এখন সিদ্ধান্ত সরকারের।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বর্তমানে ওয়াসার এক হাজার লিটার পানির উৎপাদন খরচ ২৫ টাকা, তা বিক্রি করা হয় ১৫ টাকায়। এ কারণে ভর্তুকি কমাতে চায় ওয়াসা।

তাকসিম এ খান আরও বলেন, আইন অনুযায়ী প্রতি বছর ৫ শতাংশ সমন্বয় করতে পারে ওয়াসা। তবে আমরা মনে করি ৫ শতাংশ বাড়ালে হবে না। এ কারণে মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ওয়াসার বোর্ড সভায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু বোর্ড সভায় ১৩ সদস্যদের বেশিরভাগই করোনাকালীন সময়ে পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে আগামী ১ জুলাই থেকে পানির নতুন দাম কার্যকর করতে চায় ওয়াসা। এখন দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। যদি সেখান থেকে এ বিষয়ে অনুমোদন হয় তাহলে পানির দাম বাড়বে।

তাকসিম এ খান বলেন, বর্তমানে সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে এক হাজার লিটার পানির উৎপাদন খরচ ২৫ টাকা, পদ্মা জশলদিয়ায় ২৮ টাকা ও গন্ধবপুরে ৩২ টাকা। গড় উৎপাদন খরচ পড়ে ২৭ টাকা। বর্তমানে প্রতি এক হাজার লিটার পানির জন্য আবাসিক গ্রাহকরা ঢাকা ওয়াসাকে দেন ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। বাণিজ্যিক সংযোগের জন্য এই দাম ৪২ টাকা।

সরকারের উচ্চ মহল থেকে পানির দামের ভর্তুকির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমানোর নির্দেশনা রয়েছে উল্লেখ করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, পানির দাম সহনীয় রাখতে সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। কিন্তু একটা প্রতিষ্ঠান নিজের পায়ে না দাঁড়িয়ে চলতে পারে না। ভিক্ষা করে কোনো সংস্থা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না। তাই ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে পানির দাম সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার পানিতে ভর্তুকি দিচ্ছে। সেটা কতটা কমানো যায়, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পানির দাম প্রতিবছর কমপক্ষে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়, ভবিষ্যতেও হবে। ওয়াসা বিদেশি ঋণে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এসব ঋণের গ্যারান্টার (জামানতকারী) বাংলাদেশ সরকার। এসব ঋণের কিস্তি পরিশোধে ওয়াসাকে এখন বেশি টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।

ঢাকা ওয়াসা গত দুই বছরে দুবার পানির দাম বাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে ২০০৯ সালের পর ১৩ বছরে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে ১৪ বার। করোনাকালে প্রথম দফায় পানির দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের এপ্রিলে। এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আরেক দফা দাম বাড়ে। এ দুই দফায় আবাসিকে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম বেড়েছিল তিন টাকা ৬১ পয়সা (৩১ শতাংশ)। বাণিজ্যিকে বেড়েছিল চার টাকা ৯৬ পয়সা (১৩ শতাংশ)।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *