পাসপোর্ট তৈরি বন্ধ

পাসপোর্ট তৈরি বন্ধ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর বন্ধ হয়ে যায় অন্যান্য অফিসের মতো পাসপোর্ট অফিসগুলোও। আর সেদিন থেকেই সরকার হারাতে থাকে রাজস্ব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত চার মাসে সরকার চার শ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারিয়েছে। অন্যদিকে করোনার মধ্যেও বিশেষ বিমানে করে চার লাখ পাসপোর্ট বই আমদানি করা হয়েছে। এ ছাড়া পাসপোর্ট অফিসকে সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সরকারের নির্দেশ পেলে পুরোদমে কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর পাসপোর্ট অফিস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত ৩১ মে থেকে আবার চালু হয়েছে। তখন থেকে শুধু এমআরপির নবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়। যাদের অতি জরুরি প্রয়োজন শুধু তাদের পাসপোর্ট নবায়ন করে দেওয়া হচ্ছে। নতুন পাসপোর্ট ও ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে বায়ো এনরোলমেন্টের দরকার হওয়ার কারণে বন্ধ রাখা রয়েছে। নতুন আবেদনকারীদের কোনো আবেদন নেওয়া হচ্ছে না। এতে যেখানে প্রতিদিন সারা দেশে ১৫ হাজারের মতো আবেদন জমা পড়ত, সেখানে তা নেমে এসেছে কয়েক শতে। ফলে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। তবে পাসপোর্ট অফিস পুরোদমে চালুর প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ। তিনি কালের বলেন, ‘আমরা সীমিত আকারে অফিস চালাচ্ছি। যাতে জরুরি নবায়নের কাজগুলো করা যায়। আমরা পুরোদমে অফিস চালানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সরকারের নির্দেশ পেলেই পুরোদমে কাজ শুরু করা হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর পাসপোর্ট অফিস থেকে ১২০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পায় সরকার। এই হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে রাজস্ব আদায় হয় ১০০ কোটির বেশি। কিন্তু এ বছর করোনায় পাসপোর্টের রাজস্ব চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারের রাজস্বের বড় একটি খাত পাসপোর্ট। প্রতিদিন গড়ে ১৪ হাজার আবেদনকারী আবেদন করতেন। তাদের কাছ থেকে গড়ে চার হাজার টাকা করে ফি পাওয়া গেলেও এর পরিমাণ দাঁড়ায় পাঁচ কোটি টাকার বেশি। প্রতি মাসে ২২ কর্মদিবসে শত কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আসত সারা দেশের পাসপোর্ট অফিস থেকে। বর্তমানে প্রতিদিন অতি জরুরি এমআরপি পাসপোর্টের জন্য তিন-চার শর বেশি আবেদনকারী নেই। ফলে প্রতিদিন রাজস্ব নেমে এসেছে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে প্রায় তিন মাস পুরোই বন্ধ ছিল। করোনা পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে আগামী অর্থবছরে সরকার ৫০ কোটি টাকারও কম রাজস্ব পাবে এ খাত থেকে। এ খাত থেকেই সরকারের ক্ষতি হবে সাড়ে এগারো শ কোটি টাকার বেশি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পাসপোর্ট বইয়ের সংকটের কারণে গত বছর ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে পাসপোর্ট সরবরাহ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সেই সংকট যেন আর সৃষ্টি না হয় সে জন্য এই করোনার মধ্যেও বিশেষ বিমানে চার লাখ পাসপোর্ট বই বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, ‘পুরোদমে অফিস খোলার পর পাসপোর্টের একটা চাপ আসবে। সেই চাপ সামলানোর জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *