পুনর্বাসনের সিদ্ধান্তের পরই বস্তি উচ্ছেদ : ডিএসসিসি

পুনর্বাসনের সিদ্ধান্তের পরই বস্তি উচ্ছেদ : ডিএসসিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর যানজট বাড়ার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং। যার ফলে প্রতিনিয়ত যানজট বাড়ছে রাজধানীতে। ঢাকার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়ায় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বাস রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে। যে কারণে এই এলাকায় প্রতিদিনই যানজট লেগেই থাকে। এমন সমস্যা সমাধানে রেল মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন আনন্দবাজার বস্তিতে বাসস্ট্যান্ড এবং কমলাপুর বস্তিতে একটি ট্রাকস্ট্যান্ড নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এরই ধারাবাহিকতায় এই দুই বস্তি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বস্তিবাসীরা বলেছেন, তাদের পুনর্বাসনের কার্যকর ব্যবস্থা করে তবেই যেন উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় সিটি কর্পোরেশন। আর পুনর্বাসনে যেন প্রকৃত বস্তিবাসীরাই উপকৃত হন এ বিষয় তাদের খেয়াল রাখতে হবে। এদিকে ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের পরেই বস্তি উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হবে। এজন্য কাজও চলছে।এছাড়া মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তের পর বস্তিবাসীকে সরিয়ে নিয়ে সেখানে বাসস্ট্যান্ড ও সুপার শপ নির্মাণ করা হবে। গত বছরের শেষের দিকে বস্তি দুটি উচ্ছেদের বিষয়ে জরিপ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে, র‌্যাব, ডিএমপি এবং ডিএসসিসির সমন্বয়ে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন মেয়র সাঈদ খোকন। গুলিস্তান, সায়েদাবাদ ও ফুলবাড়িয়া এলাকায় বাস রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে। আর এই এলাকা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও পরিবহন চলাচল করে, ফলে এই এলাকায় প্রতিনিয়ন বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। বিষয়গুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নিয়ে আনন্দবাজার বস্তিতে একটি বাসস্ট্যান্ড এবং কমলাপুর টিটি পাড়ার অবৈধ বস্তিটি উচ্ছেদ করে সেখানে একটি ট্রাকস্ট্যান্ড স্থাপন করালে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে বলে মত দেন সংশ্লিষ্টরা। যার ফলে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন ফুলবাড়িয়ায় আনন্দবাজার বস্তি ও কমলাপুর রেলওয়ের বস্তি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, ফুলবাড়িয়ার বাসস্ট্যান্ড সরানোর বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডটি আনন্দ বাজারে স্থানান্তর করার জন্য ওয়ান স্টপ বাস সার্ভিস নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। তবে কবে নাগাদ সরানো হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় জানাতে পারেননি নতুন দায়িত্ব নেয়া এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, জায়গাটি রেলওয়ের মালিকানাধীন। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলে সেখানে পরবর্তী কার্যক্রম চালানো হবে। এছাড়া বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের চিন্তা রয়েছে, এজন্য কাজ চলছে। এদিকে এ বিষয়ে আনন্দবাজার বস্তির বাসিন্দা জয়নাল মিঞা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষেরা এখানে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি। সারাদিন কাজ শেষে আমাদের মাথা গুজার ঠাঁই এখানেই। আগে আমাদের পুর্নবাসন নিশ্চিত করে তারপর কাজে হাত দিতে হবে। আর তা না হলে বস্তির এতগুলো মানুষ কোথায় যাবে? সে কারণে আমরা চাই আগে পুনর্বাসন, এরপর উচ্ছেদ’।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *