পোশাকশিল্পে ন্যূনতম মজুরি সংশোধনের আহ্বান ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়নের

পোশাকশিল্পে ন্যূনতম মজুরি সংশোধনের আহ্বান ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়নের

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য প্রস্তাবিত নতুন মজুরিকাঠামো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন। সংগঠনটি বলেছে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে নতুন ন্যূনতম মজুরি অপর্যাপ্ত।

ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাটলি হোয়ি গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লাকে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশসহ বিশ্বের খনি, জ্বালানি ও উৎপাদন খাতের পাঁচ কোটির বেশি শ্রমিকের প্রতিনিধিত্ব করে ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন।

চিঠিতে অ্যাটলি হোয়ি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি দেখা যাচ্ছে। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশ অতিক্রম করেছে, যা অন্তত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমন প্রেক্ষাপটে প্রকৃত অর্থে সাড়ে চার হাজার টাকা মজুরি বৃদ্ধি শ্রমিকদের জন্য একটি মানসম্মত জীবনযাত্রার জন্য যথেষ্ট হবে না।

নিম্নতম মজুরি বোর্ড গত ৭ নভেম্বর পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে। মালিকপক্ষের প্রস্তাবও ছিল সাড়ে ১২ হাজার টাকা। আগামী ১ ডিসেম্বর নতুন মজুরি কার্যকর হবে এবং জানুয়ারি মাসে নতুন কাঠামো অনুযায়ী মজুরি পাবেন শ্রমিকেরা।

ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন বলেছে, ‘আমাদের সহযোগী সংগঠনসহ বাংলাদেশের ট্রেড ইউনিয়নগুলো ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের দাবি না রেখে শুধু মালিকপক্ষের প্রস্তাব বিবেচনা করা হয়েছে।’

অ্যাটলি হোয়ি বলেন, বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ৫৬ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির হিসাব করেছে। তবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করলে দেখা যায়, প্রকৃত মজুরি বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ। যদি বর্তমান হারে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকে, তাহলে প্রকৃত অর্থে শ্রমিকেরা বর্তমানে যা আয় করছেন, ভবিষ্যতে তার চেয়ে অনেক কম আয় করবেন। এর ফলে শ্রমিকদের জন্য দৈনন্দিন জীবন নির্বাহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

এমন প্রেক্ষাপটে দেশের ট্রেড ইউনিয়নগুলোর দেওয়া প্রস্তাবকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানান ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাটলি হোয়ি।

ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশে কাজের অতিরিক্ত সময়সহ পোশাকশ্রমিকদের মাসিক মোট মজুরি দাঁড়াতে পারে ১৭ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায়। প্রতিদিন ২ থেকে ৪ ঘণ্টা বাড়তি কাজসহ কার্যকরভাবে প্রতি সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন শ্রমিকেরা। যদিও দেশের শ্রম আইন অনুসারে, ওভারটাইম করা হয় স্বেচ্ছায়। তাই ন্যূনতম মজুরি হিসাব করার সময় অতিরিক্ত কাজের সময়সহ মোট মজুরির বিষয়টি বিবেচনা করা ঠিক নয় বলে মনে করে সংগঠনটি।

সূত্র: প্রথম আলো

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *