প্রিয় ওয়ায়েজ আপনার প্রাইভেটকারের ভাড়া কেন দিতে হবে?

প্রিয় ওয়ায়েজ আপনার প্রাইভেটকারের ভাড়া কেন দিতে হবে?

প্রিয় ওয়ায়েজ আপনার প্রাইভেটকারের ভাড়া কেন দিতে হবে?

মানজুম উমায়ের :: কথা বললেই বলবেন, মরুব্বীর মাথা খারাপ। দেশের মাদরাসাওয়ালারা কী পরিমাণ কষ্ট নিয়ে, ত্যাগ নিয়ে একটা মাহফিল আয়োজন করেন এর কোনো সীমা পরিসীমা নেই। সেদিন একজন মুহতামিম দেশের করোনা পরিস্থিতির কারণে মাহফিল বাদ দিয়েছিলেন। দেখলেন, অন্তত চার মাসের বেতন ক্লিয়ার করা সম্ভব এ মাহফিল দিয়ে। সঙ্গত কারণেই আবার প্রস্তুতি নিলেন মাহফিল করবেন বলে। কিন্তু বক্তারা তো অগ্রিম পয়সা নিয়েও মাহফিলে যান না। এমন ভয়ে মুহতামিমগণ স্বপ্নেও লাফ দিয়ে ওঠেন। অনেকক্ষণ আর ঘুমুতে পারেন না।

আজকাল খেলা হবে বক্তার প্রভাব বিস্তর। একমাদরাসার মুহতামিমের সঙ্গে কথা বললাম, আপনার মাদরাসার মাহফিলে কেবল রাজনৈতিক আলাপ আলেোচনা দিয়েই মাহফিল হলো কেন? কেবল ঠিক ঠিক উচ্চারণের মুহুর্মুহু ধ্বনিতে মাহফিল ছিলো সরব। আলেম উলামার সম্মান বৃদ্ধিমূলক বক্তৃতায় সরব ছিলো পরিবেশ। তিনি আহত দৃষ্টিতে অসহায় ভঙ্গিতে বললেন, বক্তাদের পায়ে হাতে ধরেও কোনো বিষয়ের উপর কথা বলানো যায়নি। তারা নিজেদর হম্বিতম্বি জাহির করেই মাইক ছেড়েছেন। কমিটির কাছে আমি আর মুখ দেখাতে পারছি না। আমার মাদরাসার মাহফিল যেনো একটা পল্টন ময়দান। বক্তারা সবকিছু উগ্রে দিচ্ছে ওখানে। এদিকে মাহফিলও করার দরকার। ঠিকমতো বেতন দিতে হলে মাহফিল ছাড়া বিকল্প এখনো দাঁড় করাতে পারিনি আমরা।

ইদানীং নির্লজ্জের মতো অনেক বক্তা বলছেন, আমার তো মাহফিলে যাওয়ার খরচ, প্রাইভেট কার ভাড়া ৭৫০০টাকা। আমি যদ্দুর জানি, মেইল ট্রেনে চট্টগ্রাম যেতে দুশো টাকাও লাগে না।

আপনি যদি সত্যিকার অর্থেই দায়ী হন, গলাকাটা বক্তা না হন, রাসূলের উত্তরসূরী দাবি করেন, নববী আদর্শের চিন্তা থেকেই এ মাঠে এসেছেন বলে বার বার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন, নিজের শরীরে পাগড়ি, পাঞ্জাবী পরে সাধুও সাজেন তাহলে কেন প্রাইভেট কারের ভাড়াটা দিতে তারা বাধ্য হবেন?

আমি জানি, কোরআন হাদিস ঘেঁটে এর উত্তর ও যুক্তি বের করা সম্ভব নয়। এক রাতে তিনটা বা চারটা মাহফিল কেন রাখা হয়, কেবল পকেটে টাকা বৃদ্ধিই তো মূল উদ্দেশ্য, তাই না? আমি বা আমরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাই না, বক্তার এখলাস ও আন্তরিকতা এত উচ্চপর্যায়ের যে, তিনি দ্বীনের কথা প্রচার করবার জন্য এক রাতে কত কত জায়গায় তিনি হেঁটে যান। কষ্ট করেও বয়ান করেন।

প্রত্যেকের অন্তরের খবর আল্লাহ জানেন। কার মনে কী আছে তা আমরা জানি না। তবে বাইরের পোশাকীয় চরিত্র দেখে বক্তাদের নিয়ে অস্থিরতা ছাড়া আর কী-বা আছে!

এখনো নববী আদর্শে ফিরে আসা আমাদের পক্ষে সম্ভব। বেহায়াপনার বিরুদ্ধে বক্তব্য আমরা ঠিকই দিই, তবে নিজেদের হায়া বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নিই না। আল্লাহ তাআলা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতের প্রক্রিয়ায় আমাদের কাজ করার তাওফিক দিন। আমীন

লেখক : তরুণ আলেম

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *