প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন তুলসি গাবার্ড
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দুই হাজার বিশ সালের মার্কিন মুলুকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট দলের প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য তুলসি গাবার্ড। ৩৭ বছর বয়সী তুলসি গাবার্ড প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি হবেন প্রথম হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি ছিলেন ইরাক-যুদ্ধবিরোধী একজন রাজনীতিক এবং নির্বাচনে তিনি যুদ্ধ-বিরোধী প্রচারণাকেই বিশেষ গুরুত্ব দেবেন বলে জানা গেছে।
মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন-কে তুলসি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব।
এর আগে ডেমোক্র্যাট দল থেকে সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন একই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এরপর তুলসি গাবার্ড এ ঘোষণা দিলেন। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দল থেকে আরো কমপক্ষে ১২ জন প্রার্থী আসতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত আরেক সিনেটর কমলা হারিস। তবে তুলসি গাবার্ড হলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে চার বার নির্বাচিত সদস্য।
তুলসি গাবার্ড তার জীবনের প্রথম দিকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনিদের কাছে খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তি। যদি তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন তাহলে মার্কিন ইতিহাসে একসঙ্গে চারটি রেকর্ড গড়বেন। প্রথমত তিনি হবেন সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট। দ্বিতীয়ত মার্কিন ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। তৃতীয়ত তিনি হবেন খ্রিস্টান নন, এমন প্রেসিডেন্ট। চতুর্থত প্রথম হিন্দু প্রেসিডেন্ট। তবে, মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তার সামনে খুব বেশি সম্ভাবনা দেখছেন না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন এ ধরনের একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারীকে মার্কিনীরা সমর্থন করবে না।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি মানবাধিকার রক্ষায় তৎপরতা বৃদ্ধি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা ও জঙ্গি উত্থান প্রতিরোধের জন্য দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক হাউজ অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাব কমিটির সদস্য, রিপাবলিকান দলের কংগ্রেসওমেন তুলসি গাবার্ড কংগ্রেসে উত্থাপিত এক প্রস্তাবে আহ্বান জানিয়ে তিনি ২০১৫ এর জুলাইয়ে বাংলাদেশে চলা অসহযোগ আন্দোলনের কথা উত্থাপন করেন। তখন তিনি বলেন, বাংলাদেশ গোলযোগের মধ্যে রয়েছে।
তুলসি গাবার্ড ওই প্রস্তাবে বাংলাদেশে ঝুঁকিতে থাকা সব সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের প্রতি। তুলসি গাবার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রেস রিলিজ ও টুইটারে তখন তিনি লিখেছিলেন, আমি বিশেষ করে ধর্মীয় স্বাধীনতা, বিশেষ করে হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্তরা প্রায়ই থেকে যাচ্ছে শাস্তির বাইরে। এসব সংখ্যালঘুদের ওপর যারা সহিংসতা উসকে দিচ্ছে ও সংঘটিত করছে তাদেরকে থামাতে বাংলাদেশ সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করতে হবে। এই প্রস্তাবে সংখ্যালঘু সহ সব নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষার জন্য বাংলাদশে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।
গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আইনের শাস শক্তিশালী করতে ও কট্টরপন্থি গ্রুপগুলোকে প্রতিহত করতে হবে সরকারকে। কংগ্রেসম্যান ম্যাট স্যামন বলেন, আমরা আশা করি মানবিক মূল্যবোধ, মুক্তমত ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার প্রতি সম্মান দেখাবে বাংলাদেশ। সব নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে কারও রাজনৈতিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।