ফিরেই দলকে জেতালেন নেইমার

ফিরেই দলকে জেতালেন নেইমার

খেলা ডেস্ক : ক্ষণিকের জন্য পুরো অ্যানফিল্ডে তুমুল গর্জন। সমর্থক সে যে দলেরই হোক না কেন, প্রীতি ম্যাচে নেইমারের খেলা দেখতে পাওয়া যে পয়সা উশুল। ৯৮ দিন পর মাঠে নেমে নেইমার সবচেয়ে বড় স্বস্তি দিলেন ব্রাজিলকে। করলেন দুর্দান্ত এক গোল। গোল পেলেন ঘরের ছেলে ফিরমিনোও। প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিল ২-০ গোলে হারাল ক্রোয়েশিয়াকে। ব্রাজিল কতটা ভালো খেলতে পেরেছে এই ম্যাচে, সে কথা থাক। নেইমারকে এত দিন পর ফিরে পাওয়াই ব্রাজিলের জন্য সবচেয়ে সুখবর। বিশ্বকাপের আর বেশি যে বাকি নেই!

প্রথম একাদশে নেইমার ছিলেন না। ব্রাজিলও যেন ঠিক ছন্দ খুঁজে পাচ্ছিল না। গোলের বদলে প্রথমার্ধে তিনটা হলুদ কার্ড প্রসব করল দুই দল। এই তিনের একটি দেখলেন ফার্নান্দিনহো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাঁকে বসিয়ে নেইমারকে মাঠে নামালেন তিতে। গত ২৫ মার্চের পর এই প্রথম কোনো ফুটবল ম্যাচে দেখা গেল পিএসজি তারকাকে। ৫৭ মিনিটে নেইমারের পায়েই এল ব্রাজিলের গোলে প্রথম শট।

দুই দলই পুরো ম্যাচে একটু গা বাঁচিয়ে খেলেছে। ঢিলেমির ছাপ ছিল। কেউ বিশ্বকাপের আগে চোটে পড়তে চায় না। এমন ম্যাচে সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্তের জন্ম দিলেন নেইমার। ৬৯ মিনিটে।
রক্ষণের অটল দেয়াল তোলা ক্রোয়েশিয়ার দুই ডিফেন্ডারের মাঝখানে দূরত্বটা যে একটু বেশিই ছিল, সেটা ঠিক পড়ে ফেলেছেন উইলিয়ান। তিনি বল বাড়ালেন কুতিনহোর দিকে, লিভারপুল ছাড়ার পর এই প্রথম এ মাঠে খেলতে এসেছেন এই তারকা। কুতিনহোর বাড়িয়ে দেওয়া বল ধরে বক্সে এগোলেন নেইমার। তিন ডিফেন্ডার ঘিরে ধরল। নেইমারের পায়ের জাদু বিভ্রান্ত করল মাতেও কোভাচিচকে। ডান পায়ে যতটুকু জায়গা পেলেন, তা দিয়েই জোরালো শট। ক্রসবারে ধাক্কা লেগে বল ঢুকে গেল জালে।

আরেকটি উজ্জ্বল মুহূর্ত এল ৮৬ মিনিটে। এবারেও সৌজন্য নেইমার। বক্সের বেশ বাইরে ফ্রি কিক পেল ব্রাজিল। নেইমারের শট বাঁ পোস্টের মুখে পড়ে বাঁক নিয়ে বেরিয়ে গেল। বাঁকটা না নিলে বল হয়তো যেত জালেই। পুরো ম্যাচে নেইমার এই দুই মুহূর্তেই সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন। তাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিন মাস না খেলায় কিছুটা মরচে হয়তো ধরেছে। তবে একটু ঘঁষেমেজে দিলেই আবার শাণ দেওয়া দুধারি তলোয়ার হয়ে উঠবেন। নেইমার প্রস্তুতি ম্যাচ পাচ্ছেন আরও একটি। কাল জার্মানিকে হারিয়ে দেওয়া অস্ট্রিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। ১০ জুন।

এ ম্যাচে সব তারকাকেই প্রথম একাদশে রেখেছিলেন কোচ তিতে। সে তুলনায় আক্রমণ শাণাতে পারেননি জেসুসরা। বরং সে তুলনায় ক্রোয়েশিয়া ছিল বেশি উজ্জ্বল। ১৯৯৫ সালের পর এই প্রথম মার্সিসাইডের এ ম্যাচে খেলতে আসা ব্রাজিল প্রথম গোল হজম করতে বসেছিল। মাত্র ১৪ মিনিটে, লভরেনের হেডার যখন পোস্ট ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। আন্দ্রেয়া ক্রামারিচের শট আলিসন ঠেকিয়েছেন। নেইমারের গোলের ৭ মিনিট আগে আলিসন আবার বাঁচিয়েছেন বাঁয়ে ঝাঁপিয়ে, আন্তে রেবিচের হেডার ঢুকে যাচ্ছিল গোলমুখে।

নেইমার ও ফিরমিনো; উদ্‌যাপনেও দুই গোলদাতার যুগলবন্দী। ছবি: এএফপিনেইমার ও ফিরমিনো; উদ্‌যাপনেও দুই গোলদাতার যুগলবন্দী। ছবি: এএফপিএরপর নেইমারের সেই গোল। ব্রাজিলকে স্বস্তি এনে দিয়েছে ৯৩ মিনিটে ফিরমিনোর গোল। তবে নেইমারের ফেরা আর গোল পাওয়াই সবচেয়ে বড় সুখবর ব্রাজিলের জন্য। একই সঙ্গে ক্রোয়েশিয়া আর্জেন্টিনাকেও সতর্ক বার্তা দিয়ে রাখল। এ ম্যাচ হেরে গেলেও তাদের প্রতিভাধর মাঝমাঠ আর অটল রক্ষণ ভালোই পরীক্ষা নেবে আর্জেন্টিনার।

সুত্র : প্রথম আলো

_______

patheo24/105

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *