ফেরেশতাদের ঘেরাওয়ে আসো

ফেরেশতাদের ঘেরাওয়ে আসো

ফেরেশতাদের ঘেরাওয়ে আসো

মুহাম্মাদ আইয়ুব :: দুনিয়াতে আইসা যে আল্লারে পাইলো না তার মত ফকির, তার মত দরিদ্র, তার মত মাহরূম তার মত বঞ্চিত আর কেউ নেই।

সুতরাং আমাদের সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা তা হলো আমরা আল্লাকে পাইতে চাই। ১৫ তম বেলংকার ইসলাহী ইজতেমার উদ্বোধনী জুমার বয়ানটা ঠিক এভাবেই শুরু করেন অসহায় উম্মতের দরদী রাহবার আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.। আল্লাহময় বয়ানের সবটাতেই ছিল আল্লাহকে হৃদয়ে ধারণের, অন্তরে গেঁথে নেওয়ার। বয়ানের ফাঁকে ফাঁকে উম্মতকে সতর্ক করছেন মনগড়া পথ পন্থা থেকে।

‘আজ কথার নয় আমলী জিন্দেগী গড়তে হবে। বর্তমানে আমরা আমাদের জিন্দেগী বানাইছি কথার জিন্দেগী। একটি জীবন এমন বানাতে হবে যে,আমি কষ্ট করব কিন্তু আমার দ্বারা যেন অন্য কেউ কষ্ট না পায়। আল্লাহর মর্জি আমরা এমন সময় এখানে একত্রিত হয়েছি যে, করো না যাই যাই করেও যায় নাই।’

ভয়াবহ কোভিড ১৯ এর ভয়াবহতা ও প্রিয় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে হযরত বলেন, বাংলাদেশের উপর আল্লাহর খাস রহমত আছে যে কারণে আমেরিকা, চীন,ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন ইংল্যান্ড, জাপান, জার্মানির মত স্বয়ং সম্পূর্ণ দেশ এক অদেখা পোকায় বিপর্যস্ত পর্যদুস্ত হয়ে পড়েছে সেই তুলনায় অসম্পূর্ণ, অভাবী বাংলাদেশে কিছুই হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।

সকল প্রশংসা কার? বাংলাদেশের মানুষের উসিলায় নাই বটে, মাধ্যম নাই ঠিক কিন্তু এদেশের মানুষের এখনো আল্লাহর উপর ভরসা আছে। এদেশের মানুষ ভরসা করছে একমাত্র আল্লাহর উপর। এদেশের সরকার আল্লাহর উপর আশা ভরসা রেখে মসজিদ মাদ্রাসা খুলে দিয়েছে অথচ আজো পর্যন্ত স্কুল কলেজ, ভার্সিটি, কিন্ডার গার্ডেন খুলার সাহস করেনি।

ফেরেশতার ঘেরাও থেকে যাবো না: এখানে আমাদেরকে আল্লাহ এনেছেন আমি আনি নাই। আল্লাহ আসার শক্তি দিয়েছেন তাওফিক দিয়েছেন সুতরাং আমাদের আল্লাহর আদাব রক্ষা করতে হবে। বলা হয় আল্লাহ ওয়ালারা যখন কোন জায়গায় একত্রিত হয় তখন ঐ জায়গাটা ফেরেশতারা ঘেরাও করে।

আল্লাহ পাক নূর নাযিল করবেন,রহমত নাযিল করবেন,মাগফিরাত নাযিল করবেন, সুতরাং আমরা কেউ প্রয়োজন না পড়লে এখান থেকে বাইরে যাব না। যতক্ষণ এখানে থাকব ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরেশতারা আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করতে থাকে-

اللهم ارحمهم، اللهم اغفر لهم
اللهم ارحمهم، اللهم اغفر لهم
اللهم ارحمهم، اللهم اغفر لهم

হে আল্লাহ! যারা এই ঘেরাওয়ের ভিতর আছে তাদের নিচে তোমার রহমতের বিছানা বিছায়া দাও। এদের সবাইকে মাফ করে দাও আল্লাহ!

ফেরেশতারা সারাক্ষণ দোয়া করতে থাকেন। হযরতের এমন হৃদয়গ্রাহী বয়ানে তন্ময় হয়ে সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ বলে ছওয়াবের পাল্লা ভারী করে সুন্দর সূচনা করে ইজতেমায় আগত হাজার হাজার মুসল্লিয়ানে কেরাম।

আত্মশুদ্ধির টানে ঢলনামা মুসল্লীদের মজমা আমাকে স্মরণ করিয়েছে গাঙ্গুহী, থানভী, মাদানী রহিমাহুমুল্লাহ’দের প্রভুময় মজলিসগুলোর আধ্যাত্মিক চিত্র। এ যে একই বিন্তের ফুল। মন ও মননে মাওলা কারিমকে কিভাবে ধারণ করতে হয় তা আজ আমরা আমাদের বড় হুজুরকে দেখে অক্ষরে অক্ষরে শিখতে পারি। প্রভু দয়াময়! আকুল আবেদন রয় ভরপুর ইস্তেফাদা গ্রহণের।

মাহরূম করোনা মালিক তোমার প্রেমে মাতোয়ারা আত্মহারা পাগল আল্লামা মাসঊদের ফয়জ, সোহবত বরকত থেকে। বঞ্চিত করোনা মালিক, শূন্য হাতে এ দরবার থেকে ফিরিয়ে দিয়ো না।

লেখক: শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *