ফতোয়া ডেস্ক : ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ১১ জেলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৪৯ লাখ মানুষ। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ৩ হাজার ১৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বন্যাদুর্গত এলাকায় কারও মৃত্যু হলে শুকনা অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হবে। শুকনা অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়ার মতো কোনো ব্যবস্থাও না থাকলে এবং বন্যার পানি চলে যাওয়ার অপেক্ষা করলেও লাশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে এমতাবস্থায় জানাজা ও কাফন সম্পন্ন করে লাশকে ভাসিয়ে দিতে হবে। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) বলেন, লাশের সাথে ভারী কিছু বেঁধে স্রোতস্বিনী কোনো স্থানে ডুবিয়ে দেবে। শুকনো স্থানে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা থাকলে বা লাশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে ডুবিয়ে দেবে না, বরং অপেক্ষা করবে আর যথাযথভাবে দাফন করবে। (হাশিয়াতুত তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ৬১৩; ফতোয়ায়ে শামি: ৩/১৬৬)
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১১ জেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৯ জন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৯টি। এখন পর্যন্ত বন্যায় মোট ১৫ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে দুজন নারী। কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে ৪ জন, নোয়াখালীতে একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন।
জানার বিষয় হচ্ছে, বন্যায় কোনো মুসলমানের মৃত্যু হলে তার জানাজা ও দাফনের বিধান কী? ইসলামি শরিয়তে বন্যায় কারও মৃত্যু হলে তার শরীর পাক থাকলেও গোসল দিতে হবে। গোসল দেয়ার কাজটা জীবিত ব্যক্তিদের দ্বারা হয়নি। তবে, দ্বিতীয়বার গোসল না দিলেও এমতাবস্থায় ওই মৃতব্যক্তির জানাজা পড়া যাবে, কিন্তু জীবিত ব্যক্তিরা গুনাহগার হবেন। পানি থেকে উঠানোর সময় যদি একবার অথবা দুইবার অথবা তিনবার গোসলের নিয়তে নেড়ে উঠানো হয়, তাহলে গোসল করানোর দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার: ২/১৯৯; ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৫৮)
কোনো কারণে যদি লাশ এতটুকু ফুলে যায় যে, হাত লাগানোর উপযুক্ত না থাকে অর্থাৎ গোসলের জন্য হাত লাগানোর দ্বারা লাশ ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এ ধরনের নরম লাশে শুধু পানি ঢেলে দেয়াই যথেষ্ট। অতঃপর নিয়মমতো কাফন দিয়ে জানাজার নামাজ পড়ে দাফন করা হবে। তবে জানাজার নামাজ পড়ার পূর্বেই যদি লাশ ফেটে যায় তাহলে নামাজ পড়া ছাড়াই দাফন করে দিতে হবে।
(ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া: ২/১৩৬; বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৯)
বন্যাদুর্গত এলাকায় কারও মৃত্যু হলে শুকনা অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হবে। শুকনা অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়ার মতো কোনো ব্যবস্থাও না থাকলে এবং বন্যার পানি চলে যাওয়ার অপেক্ষা করলেও লাশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে এমতাবস্থায় জানাজা ও কাফন সম্পন্ন করে লাশকে ভাসিয়ে দিতে হবে। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) বলেন, লাশের সাথে ভারী কিছু বেঁধে স্রোতস্বিনী কোনো স্থানে ডুবিয়ে দেবে। শুকনো স্থানে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা থাকলে বা লাশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে ডুবিয়ে দেবে না, বরং অপেক্ষা করবে আর যথাযথভাবে দাফন করবে।
(হাশিয়াতুত তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ৬১৩; ফতোয়ায়ে শামি: ৩/১৬৬)
পানিতে ডুবে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী, তিনি শহিদের মর্যাদা পাবেন। বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পানিতে ডুবে, কলেরায়, প্লেগে ও ভূমিধসে বা চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তিরা শহিদ। (বুখারি: ৭২০)