বলিভিয়ায় অভ্যুত্থান চেষ্টা, সেনাপ্রধান গ্রেপ্তার

বলিভিয়ায় অভ্যুত্থান চেষ্টা, সেনাপ্রধান গ্রেপ্তার

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : লাতিন আমেরিকার দেশ বলিভিয়ায় সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ লক্ষ্যে প্রেসিডেন্টের প্যালেস ঘিরে ফেলেও এক পর্যায়ে সরে গেছে সেনারা। শেষ পর্যন্ত সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে; গ্রেপ্তার হয়েছেন সেনাপ্রধান হুয়ান হোসে জুনিগা।

স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ জুন) বিকেল ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি অংশ প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢোকে। প্রেসিডেন্ট লুইস আরসের বাসভবন ঘিরে ফেলে তারা।

তবে এই অভ্যুত্থান দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্টের বাসভবনসহ সরকারি এলাকা থেকে সরে যান সেনারা। প্রেসিডেন্টের নির্দেশ ও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করলে তারা পিছু হটে।

সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রাসাদে আসার পর প্রেসিডেন্ট আরসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, “বলিভিয়া সেনাবাহিনীর কয়েকটি ইউনিট বেআইনিভাবে জড়ো হয়েছে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে।”

যখন এই অভ্যুত্থান চলছে, তখনই তিনি নতুন সেনা কমান্ডারদের নাম ঘোষণা করেন। তারা তখন প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও শহর লা পাজের কেন্দ্রে থাকা অন্য জায়গা থেকে সেনাদের ফিরে আসার নির্দেশ দেন।

সেনারা যখন ফিরে যাচ্ছেন, তখন আরসের হাজার হাজার সমর্থক বলিভিয়ার পতাকা নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট বলিভিয়ার নাগরিকদের বলেন, “তারা যেন গণতন্ত্র রক্ষা করতে সক্রিয় হন।” বিশ্ব নেতারাও এই অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছেন।

এরপর বলিভিয়া কর্তৃপক্ষ বিদায়ী সেনাপ্রধান জুয়ান জোস জুনিগাকে গ্রেপ্তার করেছে।

স্থানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের ভেতরে আরসের সঙ্গে জুনিগার কথা হচ্ছে। আরসে তাকে ও সেনাদের বলছেন, “আমি আপনাদের ক্যাপ্টেন, আমি নির্দেশ দিচ্ছি, আপনারা ফিরে যান। আমি কোনো অবাধ্যতা পরোয়া করব না।”

জুনিগা টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, তার আশা ছিল সরকারে পরিবর্তন হবে। তিনি সাবেক অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টসহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালস আরসের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে জানান, তিনি তার সমর্থকদের গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে বলছেন। সেনাকে কিছুতেই গণতন্ত্র ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না এবং মানুষকে ভয় দেখাতে দেওয়া হবে না।

স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত বলিভিয়া দুইশটির মতো সেনা অভ্যুত্থান ও বিদ্রোহ দেখেছে। ২০১৯ সালে মোরালসকে যখন ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়, তখনো তার পেছনে সেনার ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।

তিনি নিয়ম ভেঙে চতুর্থবার প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেনাবাহিনী জানিয়ে দেয়, তারা তাকে তার অফিসে নিরাপত্তা দিতে পারবে না।

এরপর মোরালস পদত্যাগ করেন এবং তার সমর্থকরা অভিযোগ করেন, এটাও সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা।

সূত্র: রয়টার্স

Related Articles