পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয়ের প্রেস ব্রিফিং বিষয়ে সমাজের ৮১ বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বলছেন, নির্বিচারে অগ্নিসংযোগ, পুলিশ হত্যা, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা, ভাঙচুরসহ সব ধরনের সহিংসতাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিবাদ’-এর অন্তর্ভুক্ত করায় এই বিবৃতিটি অপরাধীদের আরও নৃশংস হতে উৎসাহিত করতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ৩১ অক্টোবর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিবাদ’ শিরোনামের প্রেস ব্রিফিং নজরে এসেছে। এতে উল্লিখিত কিছু পর্যবেক্ষণ তথ্যনির্ভর মনে হয়নি। এ কারণে এটি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
বিবৃতিদাতারা সুস্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারকের বাসভবনে হামলাকারী সব দুষ্কৃতকারীকে বিএনপির কর্মী হিসেবে শনাক্ত করা হলেও জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সেই বিবৃতিতে তার প্রতিফলন ঘটেনি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রায় ৩৫ জন সাংবাদিককে আহত করার ঘৃণ্য ঘটনা জাতিকে উদ্বিগ্ন করেছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে ইতিমধ্যে এ ঘটনায় জড়িত মুখোশধারী ও অন্য আক্রমণকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে তাদের সুস্পষ্ট যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে মারার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কিছু আক্রমণকারী মুখোশ পরে ছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) অনুমান যে, মুখোশ পরা আক্রমণকারীরা ছিল ক্ষমতাসীন দলের লোক। তাদের এই অনুমান বিভ্রান্তিকর এবং বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।
বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতি বাসভবনে হামলা, সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক আক্রমণ, পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে মারা, সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ, কয়েক ডজন গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলো আরও যাচাই-বাছাই করার অনুরোধ করা হয় ওএইচসিএইচআর-এর প্রতি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে অন্যতম অর্থনীবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সারওয়ার আলী, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, সাবেক সচিব মাসুদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা, অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সচিব উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত, অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কনক কান্তি বড়ুয়া, রাষ্ট্রদূত আব্দুল হান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাসুদুজ্জামান, সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু প্রমুখ।