বানভাসিদের বহুমুখী সহায়তা প্রয়োজন: রাষ্ট্রপতি

বানভাসিদের বহুমুখী সহায়তা প্রয়োজন: রাষ্ট্রপতি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : “দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে,” বলেন তিনি।

দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান বন্যায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পাশে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

সোমবার বঙ্গভবনে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন বলে বাসস জানিয়েছে।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলা ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে।

“অসহায় এসব লোকদের নিরাপদ আশ্রয়ের পাশাপাশি জীবনধারণের জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধসহ বহুমুখী সহায়তা প্রয়োজন।”

সাহাবুদ্দিন বলেন, “আমি আশা করি, পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে যার যতটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়েই অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাই এগিয়ে আসবেন।”

তিনি বলেন, সরকার বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতাও তাদের সাধ্যমতো সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি সনাতন ধর্মের অবতার হিসেবে প্রেম, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। শ্রীকৃষ্ণ অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় ভালো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হন।

পাপমোচন ও পূণ্যলাভের আশায় জন্মষ্টমীতে উপবাস পালন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দিনটিতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।

বাংলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, দুষ্টের দমন করতে একইভাবে যুগে যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আসেন। এসে সত্য ও সুন্দর ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেন।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, “সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন।”

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য; জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রাখতে হবে।”

সংবিধান সব নাগরিকের সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”

শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়ার পর রাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে অংশ নেন রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, বিচারপতি বিশ্বজিৎ দাস, রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল।

রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনি, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী ও প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles