বাপ-ছেলে, জামাই-শ্বশুর মিলে গরু চোর পরিবার!

বাপ-ছেলে, জামাই-শ্বশুর মিলে গরু চোর পরিবার!

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বংশানুক্রমে পরিবারের আয় রোজগারের পথ ছিল দিনমজুরি ও রিকশা চালানো। কিন্তু হঠাৎ সেই পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে জড়িয়ে পড়ে ইজিবাইকসহ বিভিন্ন চুরিতে। চালককে অচেতন করে এমনকি হত্যা করেও হাতিয়ে নেয় ইজিবাইক। পরিবারের প্রায় সকলেই কোনো না কোনো ভাবে এ পেশায় জড়িয়ে যায়। বারবার ধরা খেলেও বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। ফের দাপটের সাথে এ ধরণের অপকর্ম করেন।

আর এই চুরি কর্মের নেতৃত্ব দেন মো.আমিনুল ইসলাম ওরফে ইয়াসিন মিয়া (৪৫)। অল্প দিনেই নিজেদের ভাঙাচোরা বসতঘরের পাশে উঠেছে আলিসান আধাপাকা ঘর। পরিবর্তন ঘটে পুরো পরিবারের। পেশা পরিবর্তন করে এবার নেমেছে গরু চুরিতে। বিক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন গত শুক্রবার বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আশ্বাসে শেষ রক্ষা হয়। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার পিতা-পুত্রসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে মামলা হয়েছে।

চিহ্নিত এই চোরের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের আতকাপড়া গ্রামে। বাবা ফরিদ মিয়াসহ দুই ভাই রোমান মিয়া ও জামান মিয়া এবং পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের ধনিয়াকান্দি গ্রামের শ্বশুর আবু ছায়েদের ছেলে শ্যালক তোফাজ্জল হোসেনসহ (৩০) পরিবারের সকলেই এখন ইজিবাইক চুরি ছেড়ে গরু চুরির সাথে জড়িত হয়ে পড়েছেন। গত এক সপ্তাহে দুই উপজেলার প্রায় ২০টি গরু চুরির ঘটনায় এই দুই পরিবারের লোকজন জড়িত বলে প্রকাশ হয়েছে।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার ও শনিবার দুইজনকে গ্রেপ্তারসহ তিনটি গরু উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। থানায় থাকা ইয়াসিনের শ্যালক তফাজ্জল জানায়, গরু চুরির সকল কিছুই করেন ইয়াসিন ও তার ভাই জামাল মিয়া। দুইজনই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে গভীর রাতে কৃষকের গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করে পিকআপে করে নিয়ে যায়। এ সব কাজে তিনি নিজে শুধু সহযোগিতা করেন। তিনি এইবারেই প্রথম চারটি গরু চুরির সাথে জড়িত। এর আগে চোর ছিলেন না। রিকশা চালাতেন।

এ সকল ঘটনায় গ্রামের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে গত শুক্রবার ইয়াছিন চোরের বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এ সময় স্থানীয় এমপির হস্তক্ষেপে ও ইয়াসিনকে ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দেওয়ার আশ্বাসে বাড়িঘরে হামলা থেকে রক্ষা পায়।

ইয়াসিন চোরের আতকাপাড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পৈত্রিক ঘরটির জারাজীর্ণ থাকলেও পাশেই কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করা হয়েছে পাকাঘর। যা দেখে প্রতিবেশীরা ছাড়াও এলাকার লোকজন হতবাক হয়ে যায়। অনেকেই বলেন, আগে শুনতেন চোরের বাড়িতে বিল্ডিং হয় না। এখন শুধু বিল্ডিং না বিভিন্ন সড়কে চলমান বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস ছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা রয়েছে তাদের। রয়েছে পাশের গফরগাঁও উপজেলায় একটি অটোরিকশা সো-রুমের শেয়ার। নান্দাইল থানা সুত্রে জানা গেছে, নান্দাইল থানা ছাড়াও আশপাশের বেশ কয়েকটি থানায় তার নামে রয়েছে একাধিক চুরির মামলা।

/এএ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *