বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান

বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ১৯৫৩ সালে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খদ্দখালিশপুর গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি খালিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, পরে স্থানীয় নাইট স্কুলে সামান্য লেখাপড়ার সুযোগ পান।

শৈশব থেকে দারিদ্র্যের সঙ্গে তাঁকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়েছে। পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তিনি উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাননি। তার পরও জীবনসংগ্রামে তিনি পিছিয়ে থাকতে চাননি। তাই ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। এরপর চট্টগ্রামের সেনানিবাসে প্রশিক্ষণের জন্য যান। কিন্তু ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে নিজ গ্রামে চলে আসেন। বাড়িতে এক দিন থেকে পরদিনই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য চলে যান সিলেট জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ধলই চা-বাগানের ধলই সীমান্ত ঘাঁটিতে।

এখানে তিনি দলের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কাইয়ুমের নির্দেশে যুদ্ধ করেন। ২৮ অক্টোবর ধলই সীমান্ত ঘাঁটি দখলের যুদ্ধে শহীদ হন। তাঁর মৃতদেহ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমেরছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। নিচু স্থানে অবস্থিত কবরটি একসময় পানিতে তলিয়ে যায়।

২০০৭ সালের ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার হামিদুর রহমানের মরদেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিলে সে বছরের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একটি দল ত্রিপুরা সীমান্তে তাঁর দেহাবশেষ গ্রহণ করে। এরপর ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে লাখ লাখ শহীদের ভিড়ে সাতজনের আত্মত্যাগ ও বীরত্বকে সম্মান জানিয়ে রাষ্ট্র তাঁদের ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করেছে। তাঁদের মধ্যে হামিদুর রহমানও জায়গা করে নিয়েছেন। এই সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ পদকপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ১৮।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *