ব্যাংকগুলোকে সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ

ব্যাংকগুলোকে সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংক সাইবার নিরাপত্তা-ঝুঁকি মোকাবেলায় দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। রোবমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রস্তুতি শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এই নির্দেশ দেন। যৌথভাবে কর্মশালাটির আয়োজন করে বিআইবিএম ও ট্রান্স আইটি সলিউশন। ফজলে কবির বলেন, ক্রমবর্ধমান সাইবার নিরাপত্তা-ঝুঁকি মোকাবেলায় ও নিরাপদ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ব্যাংককর্মীদের সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, সাইবার নিরাপত্তা বিশ্বব্যাপী উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিষয়টি গুরুত্বসহ বিবেচনায় নিয়ে প্রধান আইটি কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে সর্তক। একইসঙ্গে আইটি নিরাপত্তা বিষয়ে একটি গাইড লাইনও প্রস্তুত করা হয়েছে। কর্মশালায় উপস্থাপন করা এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে বিশ্বের কোনও না কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একবার সাইবার হামলা চালাচ্ছে হ্যাকাররা। শুধু র‌্যানসমওয়্যারের কারণেই ২০১৬ সালে ক্ষতি হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সাল নাগাদ সাইবার অপরাধজনিত ক্ষতি দাঁড়াতে পারে ৬ ট্রিলিয়ন ডলার বা ৬ লাখ কোটি ডলারে। কর্মশালায় মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন তথ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রুবাইয়াত আকবর। প্রতিবেদন বলা হয়, হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে হ্যাকাররা প্রথমেই টার্গেট করে ব্যাংকের সাধারণ কর্মীদের। তাদের ভুলের ফাঁদে ফেলে গ্রাহক তথ্য চুরি ও পেমেন্ট সিস্টেমে অনধিকার প্রবেশ করার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলা করতে ব্যাংকের সর্বস্তরে অধিকতর সচেতন করার কোনও বিকল্প নেই। হ্যাকারদের আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, আর্থিক ও ব্যাংকিং খাত।

বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোতে কর্মরত সবাইকে সাইবার আক্রমণের ধরন সম্পর্কে ধারণা লাভ ও এর প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কর্মশালায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। ব্যাংকারদের সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, মাঝারি মাপের প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে অনেক ব্যাংকের গ্রাহকসেবা বন্ধ হয়ে যাবে। আর বড় ধরনের বিপর্যয় হলে কোনও ব্যাংকেরই সেবা দেয়া সম্ভব নয়। কারণ ডাটা সেন্টারের যে ধরনের নিরাপত্তা দরকার তা ব্যাংকগুলোর নেই। ট্রান্স আইটি সলিউশনের সিইও আমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে তথ্য নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুধু ঢাকা বা বড় শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রতিটি জেলা পর্যায়ে ব্যাংককর্মীদের জন্য এ রকম ভিন্নধর্মী কর্মশালা আয়োজন করা যেতে পারে। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *