ভারতে মুসলিম জাতিসত্তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতি রক্ষায় কেন্দ্রীয় ধর্মীয় শিক্ষা বোর্ডের যুগাপযোগী নানা পদক্ষেপ গ্রহণ

ভারতে মুসলিম জাতিসত্তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতি রক্ষায় কেন্দ্রীয় ধর্মীয় শিক্ষা বোর্ডের যুগাপযোগী নানা পদক্ষেপ গ্রহণ

দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের কেন্দ্রীয় ধর্মীয় শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি মুফতি আবুল কাসিম নুমানির সভাপতিত্বে নয়াদিল্লিতে মারকাজি দ্বীনি তালিমী বোর্ডের (জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের কেন্দ্রীয় ধর্মীয় শিক্ষা বোর্ড) একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মুফতি আবুল কাসিম নুমানির বক্তব্য

দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসিম নুমানি তার বক্তব্যে বলেন, আমরা নিজেদেরকে এক সংকটময় অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি।

আমাদের বিরোধী লোকেরা আমাদের ঘিরে আছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম তাদের প্রধান টার্গেট। আমাদের যুবকদের এইসব ভয়াবহ পরীক্ষা থেকে রক্ষা করতে হবে।

মুসলিম যুবকদের অন্তরে জ্ঞান, প্রজ্ঞা এবং ঈমানের তাৎপর্য দিয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।

ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য। সামান্য অবহেলাও আমাদের গভীর অতল গহ্বরে নিয়ে যেতে পারে।

মুফতি আবুল কাসিম নুমানি আরও বলেন, এই গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে আমাদের সম্প্রদায়ের বুদ্ধিমান, বুদ্ধিজীবীদের এবং দ্বীনি মাদ্রাসায় দায়িত্বরতদের প্রতি আমরা বিশেষ আহ্বান জানাচ্ছি যে, তারা দেশের সকল ধর্মীয় মক্তবগুলোর উন্নয়নে জোড় দিবেন।

বিশেষ করে মুসলিম মেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাবেন।

পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা বোর্ডের সহযোগিতায় একটি শক্তিশালী এবং টেকসই সমাজ ব্যবস্থা সৃষ্ঠির লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন।

ইনশাআল্লাহ, এভাবেই আমরা আমাদের ধর্মের ভিত্তি মজবুত করতে পারবো এবং আমাদের উম্মাহর ঐক্যকে শক্তিশালী করতে পারবো।

মাওলানা সায়্যিদ মাহমুদ আসআদ মাদানীর বক্তব্য

জানেশীনে ফিদায়ে মিল্লাত, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি, আওলাদে রাসূল মাওলানা সায়্যিদ মাহমুদ আসআদ মাদানী তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের আকাবীরগণ ধর্মীয় মক্তবগুলোকে ‘অক্সিজেন’ হিসাবে সাব্যস্ত করেছিলেন। তাই আমরা আমাদের ঘরের প্রতিটি শিশুকে মক্তবে পাঠাবো।

এই সংকটকালে দেশে ইসলাম ও ঈমান রক্ষায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আলেমদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানাচ্ছি। আলেমরাই যদি না এগিয়ে আসে, তাহলে আর কে এগিয়ে আসবে?

মাওলানা মাহমুদ মাদানি আরও বলেন, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের ধর্মীয় শিক্ষা বোর্ড আগামী তেরো মাসের মধ্যে সারা দেশে দশ হাজার সংগঠিত ধর্মীয় মক্তব প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কিন্তু এই উদ্দেশ্যকে সফল করতে দেশের সকল মাদ্রাসা, তাবলীগ জামাত, জমিয়তের উলামায়ে কেরামসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা কামনা করছি।

সুতরাং, আজ আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করছি, কেবল একনিষ্ঠভাবে, একাত্মতার সাথে মুকাবিলা করার দ্বারাই এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব।

গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ

সভায় পাঠ্যক্রমের জন্য একটি গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ কর্ণাটকের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামসুদ্দিন বিজলী যার নেতৃত্বে থাকবেন।

প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা পাঠ্যক্রম এবং শিশুদের জন্য উর্দুতে লেখা একটি বই “তাহরির শিখো” সংকলন করেছে, যে দুটিই অনুমোদিত হয়েছে।

বাংলা ও তামিল ভাষায় “দীনি তালিমাত” এর অনুবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

তদুপরি, বোর্ডের কার্যক্রম আরও বেগবান করতে বার্ষিক বাজেট দুই কোটি রুপিতে উন্নীত করা হয়েছে।

সভার সমাপ্তি

দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি মুফতি আবুল কাসেম নুমানির দোয়ার মাধ্যমে সভা শেষ হয়।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের উর্দু প্রেস রিলিজ থেকে সংক্ষেপিত।

মূল প্রেস রিলিজের পিডিএফ ভার্সন দেখতে এখানে ক্লিক করুন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *