পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আসাম রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৬ জুন থেকে এখানে দ্বিতীয়বারের মতো বন্যা দেখা দিয়েছে, এতে ১৯ জেলার ছয় লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং আট হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সোমবার রাজ্যটিতে অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বে এক শিংওয়ালা গণ্ডারের বৃহত্তম বাসস্থান আসামের কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানও বন্যায় ডুবে গেছে। এই বনে প্রায় ২২০০টি একশৃঙ্গযুক্ত গণ্ডারের বাস, এটি বিশ্বব্যাপী এ প্রজাতির মোট সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ।
কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের ২৩৩টি আশ্রয় শিবিরের মধ্যে অর্ধেকের বেশি প্লাবিত হয়েছে। এ বনের চারটি প্যারা হরিণ ডুবে মারা গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ফাইজুল ইসলাম রয়টার্সের অংশীদার বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘বন্যার পানি এখন আমার ঘরে ঢুকেছে। পানিতে আমার ধান ও অন্য ফসলগুলো ডুবে গেছে। পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে এখানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি। পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে আমি আমার বাড়িটিও হারাবো।’
এএনআইয়ের ভিডিও ফুটেজগুলোতে ডুবে যাওয়া ফসলের মাঠ ও সড়ক দেখা গেছে। লোকজন তাদের ডুবে যাওয়া বাড়ি থেকে আসবাবপত্র ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিস সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। প্রতিবেশী বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও টানা বৃষ্টির ফলে ও ভারত থেকে নেমে আসা পানির কারণে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশে পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আসামের প্রতিবেশী রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের রজধানী ইটানগরে অবিরাম বর্ষণের কারণে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আগামী তিন দিন ওই অঞ্চলে আরো বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে দেশটির পশ্চিম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে তারা।
এএসডিএমএর বন্যা রিপোর্টে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বন্যার পানিতে ৭৪টি সড়ক, ছয়টি সেতু ও ১৪টি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আরো পাঁচটি বাঁধ ভেঙে গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ৪২ হাজার ৪৭৬.১৮ হেক্টর ফসলি জমি। এছাড়া, বন্যায় আট লাখ ৩২ হাজার ৯৯টি পশুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সূত্র: এএনআই