মতভেদ ডিঙিয়ে জাতিসংঘে রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রস্তাব পাস

মতভেদ ডিঙিয়ে জাতিসংঘে রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রস্তাব পাস

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ও এই জনগোষ্ঠীর পক্ষে ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে চলমান সংকটটির টেকসই সমাধানের ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুলাই) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৩তম অধিবেশনে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিবেশনে বাংলাদেশের উদ্যোগে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো–অপারেশনের (ওআইসি) সব সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়।

মিয়ানমারের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকির পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে প্রস্তাবটি উত্থাপনের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে স্পষ্ট মতভেদ দেখা দেয়। দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যাবাসন সম্ভব নয় বলে মত দেয় অনেক সদস্য রাষ্ট্র। বিপরীতে দীর্ঘসময় ঝুলে থাকার অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার আবশ্যকতা নিয়ে মত ব্যক্ত করা হয়। অবশেষে, নিবিড় ও সুদীর্ঘ আপস-আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি আজ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

প্রস্তাবটিতে নির্যাতিত ও বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাময়িক আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করা হয়। এ ছাড়াও এতে প্রত্যাবাসন নিয়ে চলমান দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা এবং এর নানাবিধ নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাখাইনে দ্রুত সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দেওয়া হয়।

প্রস্তাবে, ক্রমহ্রাসমান ও অপর্যাপ্ত অনুদান-সাহায্য বিবেচনায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের ওপর হওয়া যৌন অপরাধসহ সব ধরনের নির্যাতন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনা ও তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকেও সমর্থন জানানো হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *