মন্ত্রীর আশ্বাসে প্রত্যাহার রেলের ধর্মঘট

মন্ত্রীর আশ্বাসে প্রত্যাহার রেলের ধর্মঘট

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নিজেদের দাবি আদায়ে রেল কর্মচারীদের ডাকা ধর্মঘট অবশেষে প্রত্যাহার করে নিয়েছে রেলওয়ে রানিং স্টাফরা। বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকে এক দফা দাবিতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার পর দুপুর ১২ টার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতি।

পূর্ব নির্ধারিত মাইলেজ বা ভাতা বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে বেলা ১২ টার দিকে রেলের রানিং স্টাফদের ভাতা বাতিলের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করা হবে বলে ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী। এরপরই ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা জানায় রেলওয়ের কর্মচারীরা।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন। বেতনভাতা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের দাবিতেই সারাদেশে একযোগে ট্রেন চালকরা ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে সারাদেশের ট্রেনের সাধারণ যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কমলাপুর স্টেশনে যান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং সচিব হুমায়ুন কবির। মন্ত্রী গিয়ে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি মেনে নেয়াসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রজ্ঞাপন বাতিল ঘোষণা করেন।

এরপর রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ধর্মঘট প্রত্যাহারের এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সবাই কাজে ফিরবেন, আবার চালু হবে ট্রেন।

এর আগে তিনি বুধবার সকালে বলেন, গত এপ্রিলে যে প্রজ্ঞাপন হয়েছে, তাতে আমাদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি ছিল। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তা বাড়ানো হয়নি। এর আগে আমাদের এই দাবিটি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন সচিব মহোদয়। উনার কাছে আমরা লিখিত দাবিও জানিয়েছিলাম।

এদিকে হঠাৎ করেই ধর্মঘট ডাকায় বুধবার ভোর ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৮টি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিডিউল বিপর্যয়ের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার গণমাধ্যমকে জানান, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে দিনে ৭২টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। কিন্তু আজ ধর্মঘট থাকায় ভোর ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৮টি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এসব ট্রেনের টিকিটের টাকা যাত্রীদের ফেরত দেয়া হচ্ছে। একইভাবে দেশের অন্যান্য স্টেশন থেকে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বরত মাস্টার আফসার উদ্দিন ধর্মঘটের সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারীদের এক দফা দাবি নিয়ে ট্রেন চালানো বন্ধ করে দিয়েছে ড্রাইভাররা । যার ফলে সারা দেশেই ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল ৬টা থেকে দেশের সব জায়গায় একযোগে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সমস্যা নিরসনের জন্য আলোচনা চলছে। সমাধান হলেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়ে কমলাপুর রেলওয়ের মাইকে বলা হয়, অনিবার্য কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কখন থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হবে সেটিও বলা যাচ্ছে না। কেউ চাইলে টিকিট ফেরত দিয়ে কাউন্টার থেকে টাকা ফেরত নিতে পারেন।

বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকেও কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। হঠাৎ করেই ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় ওই স্টেশনেও অসংখ্য যাত্রীকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *