পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম ২০% থেকে ৫০% শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষেরা তাদের দৈনিক আমিষ গ্রহণে কাটছাঁট শুরু করেছেন। এর ফলে জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঢাকার কামরাঙ্গির চরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান মোহাম্মদ রাসেল ব্যাপারী। তার একার আয়ের ওপর নির্ভর করছে পাঁচ সদস্যের পরিবার।
সাধারণত সারাদিন রিকশা চালিয়ে মি. ব্যাপারী ৮০০ থেকে ১০০০ টাকার মতো আয় করেন। এরমধ্যে ৪০০ টাকা দিতে হয় রিকশার জমা খরচ হিসেবে।
বাকি টাকার মধ্যে তিনশ টাকা মাস শেষে বাড়িভাড়া ও তিন সন্তানের পড়াশোনা বাবদ আলাদা রাখতে হয়। এরপর হাতে যা থাকে সেটি দিয়েই চলে খাওয়া ও অন্যান্য খরচ।
সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় তিন বেলা খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। সেখানে মুরগি বা ডিম কেনা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
“আগে তো সপ্তাহে এক বেলা হলেও বাচ্চাদের নিয়ে মুরগির মাংস, ডিম দিয়ে খাইতে পারতাম। এখন মাসে, দুই মাসেও খাই না। খরচে কুলাইতে পারি না। বাচ্চারা তো মাংস খাইতে চায়। কান্নাকাটি করে। কিন্তু আমার তো সামর্থ্য নাই খাওয়ানের।” বেশ আক্ষেপের সুরেই বলেন তিনি।
এখন তার খাবারের তালিকায় মূল উপকরণ অল্প দামের শাকসবজি ও আলু। মাঝে মাঝে গুঁড়া মাছ, না হলে পোয়া মাছ কেনার চেষ্টা করেন।
এর চাইতেও নিদারুণ অবস্থা গৃহকর্মী পারুল বেগমের। শেষ তিনি মুরগির মাংস খেয়েছিলেন জানুয়ারি মাসে। আগে সপ্তাহে দুই তিন বেলা ডিম খেলেও সেটাও এখন যোগাড় করার উপায় নেই।
“মুরগি, ডিম এগুলো বড়লোকের খাবার, আমাদের জন্য কিছুই না। চাল কিনতেই, বাড়িভাড়া দিয়াই টাকা যায় গা, আলু দিয়া খাইতেসি তিনদিন, বাচ্চা মানুষে বাসা থেকে দুইটা ডিম দিলে খাই। মাংস চোখে দেখি না” – তিনি বলেন।
সূত্র : বিবিসি বাংলা