মূর্তি সরাতে সাউন্ডগ্রেনেডের মতো হুংকার দাওয়াতের মেজাযবিরোধী
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সাউন্ডগ্রেনেডের মতো হুংকার দিয়ে মূর্ত সরানোর চেষ্টা দাওয়াতের কোনো পদ্ধতি নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী রহ.-এর খলীফা শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তিনি বলেন, নবীজী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন ভালোবাসায় ও আন্তরিকতা দিয়ে। মানুষের হৃদয় গড়ার চেষ্টা করেছেন। হেকমত ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে তিনি আল্লাহভোলা মানুষকে দ্বীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হতে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত। সৎকর্ম ও অসৎকর্ম কখনো সমান নয়। জবাব নম্রভাবে দাও, দেখবে তোমার শত্রুও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ বড় আফসোস, মানুষের হৃদয় গড়বার আগেই বায়তুল মোকাররম থেকে হুংকারে মূর্ত কীভাবে সরানো সম্ভব। হুংকার তো দাওয়াতের কোনো পদ্ধতি নয়। নবীজী দীর্ঘ তের বছর মানুষকে বুঝিয়েছেন মক্কায়। দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। কখনো মূর্তি ভাঙার হুংকার দেননি। কোমলভাবে বুঝিয়েছেন। মক্কা বিজয়ের পর সেই মানুষেরাই নিজেরা মূর্তি ভেঙেছেন।
শুক্রবার (২০ নভেম্বর ২০২০) রাজধানীর খিলগাঁও ইকরা বাংলাদেশ জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে জুমার বয়ানের আগে মুসল্লিদের উদ্দেশে বয়ানে মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী রহ.-এর এই খলীফা শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ এসব কথা বলেন।
আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, বৈরি পরিবেশে দ্বীনের প্রতি মানুষকে দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে হেকমত অবলম্বন করতে হবে। মানুষের হৃদয় গড়ার কাজ করতে হবে। মানুষের হৃদয় যদি মূর্তিবিরোধী হয়, দুর্নীতি বিরোধী হয়, ধর্ষণবিরোধী হয় তাহলে সমাজে মূর্তি, ধর্ষণ, দুর্নীতির কোনোটাই থাকবে না। আমরা যদি মানুষের কলবের মেহনতে সফল হতে পারি তাহলে অন্যসব ক্ষেত্রেও সফলতা লাভ করতে পারবো। আজকে কোনো মূর্তি ভেঙে দিলে নতুন আরও বেশি মূর্তি তৈরি হয়ে যাবে। অতীতে আমরা দেখেছি এমনটা হয়েছে। বাবরি মসজিদের সময়ও এমন নজির আছে।
তিনি বলেন, আসুন, আমরা মানুষের মন থেকে মূর্তিপ্রেম দূর করি। মানুষ যদি এই মূর্তি বানানো যে ঠিক নয়, মূর্তির অসারতা তাদের হৃদয়ে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হই তাহলে নিজেরাই এই মূর্তি ভাঙতে চেষ্টা করবে। কখনো মূর্তি নির্মাণের চেষ্টা করবে না। হুংকার নয় ভালোবাসা দিয়েই, দ্বীনের প্রকৃত দাওয়াতের মাধ্যমে সমস্যা নিরসন সম্ভব।