মোবাইলে কেনিয়া, ব্রডব্যান্ডে নেপালেরও পেছনে বাংলাদেশ

মোবাইলে কেনিয়া, ব্রডব্যান্ডে নেপালেরও পেছনে বাংলাদেশ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ইন্টারনেটের গতি নিয়ে গ্রাহকের অভিযোগের শেষ নেই। দেশব্যাপী অবকাঠামো গড়ে উঠলেও ইন্টারনেটে সার্বিকভাবে খুব বেশি উন্নতি হয়নি। বৈশ্বিক তালিকায়ও বাংলাদেশের অবস্থান শেষের দিকে। গত অক্টোবরে মোবাইল ইন্টারনেটের বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৪২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১১তম; আগের বছরের অক্টোবরে ছিল ১২৬তম। র‌্যাঙ্কিংয়ে এক বছরে ১৫ ধাপ এগোলেও বাংলাদেশ এখনও কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও উগান্ডার মতো আফ্রিকার দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে আছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে প্রতিবেশী নেপাল ও ভারত।

এক বছরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিংয়ে তিন ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১০৮তম।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেটের গতি কেমন, তা তুলে ধরে স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওকলা। তাদের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য
জানা গেছে।

ওকলার অক্টোবর মাসের তথ্য বলছে, মোবাইল ইন্টারনেটে বৈশ্বিক তালিকায় উগান্ডার অবস্থান এখন ৬৯তম, ইথিওপিয়া ৭৩তম আর কেনিয়া ১০৫তম। প্রতিবেশী ভারত অনেক এগিয়ে (২৮তম)। তবে মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে পাকিস্তান (১২৬) ও নেপাল (১২৭) বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে।

ওকলার তথ্যমতে, ২০২২ সালের অক্টোবরে মোবাইল ইন্টারনেটে গড় ডাউনলোড গতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ এমবিপিএস এবং আপলোড গতি ছিল ৮ দশমিক ৩৮ এমবিপিএস। দুই পর্যায়েই বেড়ে এ বছরের অক্টোবরে ডাউনলোড গতি হয়েছে ২০ দশমিক ৬৬ এমবিপিএস আর আপলোড গতি ১০ দশমিক ০৬ এমবিপিএস। দক্ষিণ এশিয়ায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ওপরে রয়েছে নেপাল (৮৭তম) ও ভারত (৮৯তম)। বাংলাদেশের ব্রডব্যান্ড ডাউনলোড গতি ৩৮ দশমিক ৬৫ এমবিপিএস এবং আপলোড গতি ৩৯ দশমিক ৯১ এমবিপিএস। গত বছরের অক্টোবরে ডাউনলোড গতি ছিল ৩৩ দশমিক ৩৮ এমবিপিএস এবং আপলোড গতি ছিল ৩৫ দশমিক ২৯ এমবিপিএস।

গতি কেন কম
খাত-সংশ্লিষ্টদের মতে, মোবাইলের নেটওয়ার্ক সমস্যা দেশজুড়ে। অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্কের সক্ষমতার চেয়ে গ্রাহক অনেক বেশি। তাই গ্রাহকরা মানসম্মত সেবা পাচ্ছেন না। দেশজুড়ে আনাচে-কানাচে অগণিত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর নিয়ন্ত্রক সংস্থার খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ নেই। মানহীন যন্ত্রপাতি এবং অল্প ব্যান্ডইউথে বেশি গ্রাহককে ভালো সেবা দিতে পারছে না আইএসপিগুলো। এ ছাড়া যখন তখন ফাইবার কাটা পড়া, যত্রতত্র জ্যামার স্থাপনসহ নানা কারণে ইন্টারনেট গতি কম।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, অপারেটরগুলোর সক্ষমতার চেয়ে গ্রাহক অনেক বেশি। এ কারণে মোবাইল ইন্টারনেটে মানসম্মত সেবা মেলে না।
ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে অধিকাংশ আইএসপি পর্যাপ্ত ব্যান্ডউইথ ছাড়াই বেশি সংখ্যক গ্রাহককে সেবা দিতে যায়। পাশাপাশি দেশব্যাপী যে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, অনেক ক্ষেত্রে তার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
ওকলার প্রতিবেদনকে নাকচ করে দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সমকালকে বলেন, দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে সংযোগ পৌঁছে গেছে। গ্রাহক বাড়ছে। গতি বাড়ছে। তাই আমার কাছে ওকলার প্রতিবেদন বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। তারা কার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তাও নিশ্চিত নই।

তিনি আরও বলেন, সেবার মান উন্নয়নে মোবাইল অপারেটর ও আইএসপিদের নিয়মিত নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা বেশ উন্নতি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *