পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ‘সফল’ বৈঠক করার কথা জানিয়েছে চীন। আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠেয় শীর্ষ বৈঠককে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উষ্ণতা বৃদ্ধি বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ। আর যে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে উষ্ণতা বৃদ্ধি হচ্ছে তার জন্য দায়ী শীর্ষ দুই দেশ হচ্ছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।
আসন্ন কপ২৮ সম্মেলনের আগে তাদের মধ্যে মতৈক্যের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এ সম্মেলনের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করবে এই দুই দেশের সমঝোতার ওপর।
চীনের পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, মার্কিন জলবায়ুবিষয়ক দূত জন কেরি ও তাঁর চীনা প্রতিপক্ষ শি জিনহুয়ার মধ্যে গত বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকটি সফলতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বৈঠকে উভয় পক্ষ ব্যাপক ও গভীর মতবিনিময় করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ও পদক্ষেপের বিষয়ে ইতিবাচক ফল অর্জিত হয়েছে। মার্কিন জলবায়ুবিষয়ক দূত জন কেরি বলেছেন, তিনি ‘পাঁচ দিনেরও বেশি সময় ধরে চীনের সঙ্গে ‘ব্যাপক ও গঠনমূলক আলোচনা’ সম্পন্ন করেছেন।
এক বিবৃতিতে কেরি বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি বিষয়ে অভিন্ন অবস্থানে পৌঁছেছি, যা কপ২৮ সম্মেলনের আগের গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহগুলোতে ফলপ্রসূ বিবেচিত হবে বলে আশা করা যায়।’ চলতি মাসের শেষের দিকেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বৈশ্বিক কপ২৮ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা এবং পরিবেশবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এ সম্মেলনের লক্ষ্য হবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে মতৈক্য গড়ে তোলা। নানামুখী স্বার্থের কারণে কাজটি সহজ হবে না। চীনের পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈঠকে কপ২৮ সম্মেলনের সফলতা নিশ্চিত করার জন্য বেইজিং ও ওয়াশিংটন ‘যৌথভাবে চাপ দিতে’ সম্মত হয়েছে। বেইজিং ও ওয়াশিংটন বাণিজ্য, মানবাধিকার, জাতীয় নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তলানিতে ঠেকা সম্পর্ক জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছে।
শীর্ষ বৈঠক নিয়ে প্রত্যাশা
উভয় দেশের নেতারা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহের শীর্ষ বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিশ্বের এই দুই পরাশক্তির মধ্যে দীর্ঘদিনের বৈরী সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চীন কোনো পক্ষই বাইডেন ও শির মধ্যে অনুষ্ঠেয় বৈঠকের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। তবে বুধবার একটি সূত্র জানায়, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনের এক ফাঁকে বুধবার বাইডেন ও শির বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বাইডেন ও শির মধ্যে অনুষ্ঠেয় বৈঠকের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘সান ফ্রান্সিসকোর পথ মসৃণ হবে না।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যগুলো এগিয়ে নিতে এবং ব্লুমবার্গ নিউ ইকোনমি ফোরামে ভাষণ দিতে মার্কিন দূত কেরি আজ শুক্রবার সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হবেন। দপ্তরের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র-সিঙ্গাপুর ক্লাইমেট পার্টনারশিপের অধীনে কেরি সে দেশের সরকারের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে উদ্যোগগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।
সূত্র : এএফপি