রংপুরে উন্মোচিত হল বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য

রংপুরে উন্মোচিত হল বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সারাদেশে ভাস্কর্য নিয়ে চলমান এই বিবাদের মধ্যে এবার রংপুরে উন্মোচিত হল বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য। বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যু দিবসে এই ভাস্কর্য ‘আলোকবর্তিকা’ এর উন্মোচন করা হয়েছে।

বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় রংপুর নগরীর শালবন ইন্দ্রা মোড়ে ভাস্কর্যটি উন্মোচন করা হয়। দুপুরে এ উপলক্ষে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রকাশক সাকিল মাসুদের সঞ্চালনায় আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ভাস্কর অনীক রেজা, লেখক রেজাউল করিম মুকুল, কবি ও অধ্যাপক ড. শাহ্ সুলতান তালুকদার, মাহবুব লাভীন, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের সহকারি অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম দুলালসহ অন্যরা।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ভাস্কর্যটি উন্মোচনের ফলে বর্তমান প্রজন্ম রোকেয়া সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারবে। আর ছোটদের কাছে মহিয়সী বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতি চেনা হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, তখন রোকেয়াকে জানা, তার লেখা বই ও বাণী জানাটা অনেকের জন্য সহজ হবে। সব মিলিয়ে এই ভাস্কর্য উন্মোচনের মধ্যে দিয়ে রংপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য আরো সমৃদ্ধ হবে। এছাড়া নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের পাশেই এ ভাস্কর্য তৈরি হওয়ায় নারী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নেয়ার অনুপ্রেরণা হবে এই ভাস্কর্য। রোকেয়ার এই ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে রোকেয়া চেতনার আলোকিত যুগ।

ভাস্কর অনীক রেজা জানান, এই ভাস্কর্যের প্রাথমিক কাজ তার পীরগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে শুরু করেছিলেন। ওই সময় দুই দফায় কে বা কারা তার অনুপস্থিতিতে তা ভেঙে ফেলে। এতে তিনি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হন। একারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ ছিল।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ৭ নভেম্বর শালবন ইন্দ্রা মোড়ে রোকেয়ার ‘আলোকবর্তিকা’ ভাস্কর্যটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রয়াত সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। এরপর ধীরগতিতে চলা নির্মাণ কাজ হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। মাটি থেকে শুধু উঁচু বেদি তৈরির পরে কয়েকটি ইটের পিলার ছাড়া তখন আর কিছুই ছিল না। অযত্ন- অবহেলায় পড়ে থাকা বেদিটি ভরে ছিল ধুলোবালি আর বিভিন্ন ফেস্টুন পোস্টারে। মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা সেই বেদিটি দেখে হতাশ হয়েছিল স্থানীয় এলাকাবাসীসহ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন মহল থেকে তখন ওই ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জোরালো হয়ে উঠে। অবশেষে বছর তিনেক বন্ধ থাকার পর আবারো শুরু হয় নির্মাণ কাজ।

রংপুর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, ‘আলোকবর্তিকা’ ভাস্কর্যটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয়েছে। এটির উচ্চতা মাটি থেকে ২০ ফুট। এর মধ্যে শুধু পাথর-কংক্রিট থেকে বেরিয়ে আসা রোকেয়ার প্রতিকৃতি লম্বায় প্রায় ১২ ফিট। আর বেদির চারদিক জুড়ে পঞ্চাশ স্কয়ার ফিট। পাথরের ভিতর থেকে সমাজ পরিবর্তনে শিক্ষার শক্তি নিয়ে বেরিয়ে আসা রোকেয়ার এই ভাস্কর্যটিতে জন্ম-মৃত্যু সন উল্লেখসহ তার লেখা কিছু বই ও বাণী রয়েছে। যার মধ্যে অবরোধবাসিনী, মতিচুর, পদ্মরাগ, সুলতানার স্বপ্নসহ কিছু বইয়ের পাথররুপ নজর কাড়বে। এছাড়া রাতের রূপ দেখতে ভাস্কর্যটির চারপাশে লাইটও লাগানো হয়েছে।

/এএ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *