রাজধানীতে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা

রাজধানীতে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : রাজধানীর সায়েদাবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া তিন যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন (১৯), সাঈদ আরাফাত শরীফ (২০) ও অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি। গতকাল সকাল ৬টার দিকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কৌশলে একজন মাদরাসাছাত্রসহ ওই তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এরপর মিথ্যা ধোয়া তুলেছে যে, ওই তিনজন কাউকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। তবে কাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে সে ব্যপারে তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি ধর্ষণের অভিযোগ কে ছড়িয়েছে, তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নিহত সাইদুল ইসলাম ইয়াসিনের বাবার নাম সাখাওয়াত হোসেন। তারা যাত্রাবাড়ীর ধলপুর বউবাজারে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ইয়াসিন কুতুবখালী এলাকার একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করতেন।

নিহত ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার বলেন, ইয়াসিন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে থেকে ১৫ দিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে আসছিল। বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী থানা পাহারা, বাজারের নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কাজ করছিল। সে মাকে বলেছিল ভালোভাবে কাজ করলে সার্টিফিকেট দেবে। গত মঙ্গলবার রাতেও যাত্রাবাড়ী থানায় ছিল। রাত ১২টার দিকে ফোন দিলে জানায়, এই মাত্র বিরিয়ানি খেয়েছি। তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। ভোর হতেই বাসা ফিরে ঘুমাবো। গতকাল বুধবার ভোর ৪টার দিকেও তার সাথে কথা হয়। তখনো সে সুস্থ-স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু কেউ একজন ফোন করে জানায়, ‘আপনার ছেলের অবস্থা ভালো না, দ্রুত যাত্রাবাড়ী থানায় আসেন। দ্রুত সেখানে গিয়ে ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পাই। সেখান থেকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পথে ইয়াসিন মায়ের সাথে কথা বলেছে। বলেছে, একদল লোক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মারধর করেছে। ওরা কোনো অপরাধ করেনি। এরপর মায়ের কোলেই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

অন্য দিকে সাঈদ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কদমীরচর গ্রামের কবির হোসেনের সন্তান। যাত্রাবাড়ীর টনি টাওয়ার এলাকায় থাকতেন তিনি। সাঈদকে হাসপাতলে নিয়ে আসা স্কাউট সদস্য সম্রাট শেখ বলেন, সায়েদাবাদে গণধর্ষণের অভিযোগে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা এই তিনজনকে গণপিটুনি দেয় বলে জানতে পারি। পরে সায়েদাবাদ থেকে কে বা কারা তাদের যাত্রাবাড়ী থানায় রেখে যান। এদের মধ্য থেকে আমি সাঈদ আরাফাত শরীফকে ঢাকা মেডিক্যালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে ধর্ষণের অভিযোগ কে দিয়েছে বা কাকে ধর্ষণ করা হয়েছে; সে ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারেন না বলেও জানান সম্রাট।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, সায়েদাবাদ থেকে ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনির শিকার হন তিনজন। তাদের ঢাকা মেডিক্যালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

Related Articles