দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের উপদেষ্টা কমিটিতে রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক।
এই অবস্থায় উজ্জীবিত দেখা যাচ্ছে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিকে। এসবের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে নতুন কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করা হবে কি-না তা নিয়ে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণাবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের পর এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি তখন বলেছিলেন, “জনগণ যদি মনে করে তরুণরাই রাষ্ট্রের হাল ধরবে, তবে জনগণের সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়ার জন্য তরুণরা প্রস্তুত আছে।”
নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদের উপদেষ্টা হওয়ার বিষয়ে গত ৯ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। সেখানে তিনি লেখেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকার কারণে তাদের সামনের ইলেকশনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।”
এরপর থেকেই আলোচনায় আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি।
এ বিষয়ে বিবিসি বাংলাকে সারজিস আলম বলেন, “মানুষ ভিন্ন একটি রাজনৈতিক দল তরুণদের নেতৃত্বে দেখতে চায়, যারা সৎভাবে এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বাংলাদেশে সুন্দর সমাজ গঠন করবে। বাংলাদেশের মানুষের চাওয়ার সে জায়গা থেকে আমাদের মনে হচ্ছে, জাতীয় পর্যায়ে আমরা একটি রাজনৈতিক চিন্তাধারায় যেতে পারি।”
তিনি জানান, সরকার পতনের পর দল গঠনের বিষয়ে প্রথম ভাবনা আসে। যদিও পুরো বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।
দল গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সারজিস আলম বলেন, “সব সমন্বয়ককে নিয়েই আলোচনা হচ্ছে। সবার সিদ্ধান্তের আলোকে আমরা চিন্তা করছি, আমরা একটি রাজনৈতিক কাঠামোতে যাব। আমরা সবাইকে একসঙ্গে রেখেই অফিসিয়াল ঘোষণা দেবো।”
আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “বিদ্যমান লেজুড়বৃত্তি রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে উঠেই কাজ করার সুযোগ যতক্ষণ থাকছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে জায়গাটিতেই কাজ করতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো। কিন্তু যখনই ছাত্র-নাগরিকদের চাহিদা তৈরি হবে যে পলিসি মেকিংয়ের ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়দের অংশ নেওয়া দেখতে চাই এবং সেটা নতুন ধরনের কোনো রাজনৈতিক এপ্রোচের মধ্য দিয়ে, তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যারা রয়েছে তারা ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”
একই কথা বলছেন আরেকজন সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে আমরা কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করবো কি-না সেটি একটি সময়কালীন সিদ্ধান্ত। আমরা আশা করবো সবকিছু স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছানোর পর আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো যে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান কী হবে।”
বিবিসি বাংলা ও ঢাকা ট্রিবিউনের সৌজন্যে