পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর পিতৃদত্ত নাম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। লেখালেখির জগতে এসে তিনি নিজেই নামটি বদলে ফেলেন। বিদ্রোহ, প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য নির্মাণে এবং মাটি ও মানুষের প্রতি একনিষ্ঠ দায়বদ্ধতা তাঁকে দিয়েছে সত্তর দশকের অন্যতম কবির স্বীকৃতি।
‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’—এই নির্মম সত্য উচ্চারণের পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’।
তিনি ঢাকা ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল থেকে ১৯৭৪ সালে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ছাত্রজীবন থেকে পড়াশোনা, লেখালেখি ছাড়াও রাজনৈতিকভাবে সমান্তরাল ছিল তাঁর সক্রিয়তা।=
এ কারণে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মনোনয়নে ১৯৭৮ সালে তিনি ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেন সাহিত্য সম্পাদক পদে। এরপর দেখা যায় পরবর্তী সব রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে। শুধু কবিতা লেখা নয়, রাজনৈতিক বোধের জায়গায় পৌঁছে তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সমানভাবে যুক্ত হন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং দ্বিতীয় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।
ছাত্রজীবনেই তাঁর দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। প্রথম বই ‘উপদ্রুত উপকূল’-এর প্রকাশক ছিলেন আহমদ ছফা। ১৯৮০ সালে তিনি অর্জন করেন মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার।
তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক এই কবি মাত্র ৩৪ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা করেছেন এবং সুর দিয়েছেন। তিনি নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু পরে উভয়ের সম্মতিতে তাঁদের দাম্পত্যজীবনের অবসান ঘটে।
১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর তাঁর জন্ম বরিশাল জেলার আমানতগঞ্জ রেডক্রস হাসপাতালে; যেটা ছিল তাঁরই পিতার কর্মস্থল। তবে তাঁর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সাহেবের মাঠ গ্রামে। ১৯৯১ সালের ২১ জুন তিনি মারা যান।