রোজায় ওষুধ সেবনে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

রোজায় ওষুধ সেবনে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মানবশরীরের ভারসাম্য রক্ষায় রোজা বিশেষ ভূমিকা রাখে। শারীরিক এই ইবাদত মানুষকে স্রষ্টার সান্নিধ্য এনে দেওয়ার পাশাপাশি দৈহিক প্রশান্তি এনে দেয়। সারা বছর সক্রিয় থেকে ক্লান্ত শরীরের অরগানগুলো দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে কিছুটা বিশ্রামের সুযোগ পায়।

অসুস্থ ব্যক্তিদের রমজান মাসে ওষুধ সেবনে সতর্ক থাকতে হয়। এছাড়া ডায়াবেটিস, হার্ট, কিডনি রোগীদেরও একটু বাড়তি সতর্কতা জরুরি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ড. মো. আবু জাফর সাদেক।

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও রোজার গুরুত্ব অপরিসীম। রক্তে শর্করা, কলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে, স্বাস্থ্যকর ওজন ব্যবস্থাপনায়, মানসিক উৎকর্ষ সাধনে এবং উচ্চরক্তচাপ কমাতে রোজার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

রোজাকালীন শরীর তার প্রয়োজনে যকৃৎ, মাংসপেশি এবং অন্যন্য চর্বি জাতীয় উৎস থেকে ক্যালোরির জোগান পেয়ে যায়। দীর্ঘসময় পানাহার বিরতি, প্রচণ্ড তাপ, বাতাসে জলীয়বাষ্পের কমতি, স্বাভাবিক প্রাকৃতিক কাজকর্ম এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ার কারণে মৃদু পানিস্বল্পতা হতে পারে যা ইফতারের মাধ্যমে তরল সেবনের পরপরই ঠিক হয়ে যায়।

রোজার কারণে পাকস্থলীর পিএইচ ও যকৃতের বিপাকক্রিয়ায় (ফেজ-২) কিছুটা পরিবর্তন ঘটে। যা ওষুধের শোষণ, শারীরিক সরবরাহ, বিপাকক্রিয়া, কার্যকারিতা এবং নিঃসরণ প্রক্রিয়াকে পরিবর্তন করতে পারে।

তাই রোজাকালীন ওষুধ ব্যবহারে কিছুটা বাড়তি সতর্কতা দরকার; অতিমাত্রায় পিএইচনির্ভর (হাইপার-এসিডিটির ওষুধ, ব্যথার ওষুধ), শর্করা-সংবেদনশীল (ডায়াবেটিসের ওষুধ), স্যালাইভা পরিবর্তনকারী (এন্টিহিস্টামিন, বমির ওষুধ, এন্টিকোলেনারজিক ওষুধ), এন্টিসাইকোটিক, রক্তচাপ/হার্টরেট পরিবর্তনকারী, মূত্র বর্ধক, হরমোন জাতীয় এবং আরও কিছু বিশেষ গোত্রের ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কারণ রোজায় শরীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের ফলে এসব ওষুধের কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। দৈনিক একবার খেতে হয় এমন ওষুধ রমজান মাসে সেবনে তেমন পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তা না থাকলেও দুই বা ততোধিক বার সেবনকারী ওষুধের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনার দরকার হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *