রোযায় আমলে কাটুক সারাটা ক্ষণ

রোযায় আমলে কাটুক সারাটা ক্ষণ

  • আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ

দুনিয়ার বহু কাজের জন্য মানুষ জাগে, এই কথা নয় যে, জাগে না। কিন্তু বান্দা যখন আল্লাহর জন্য জাগে, আল্লাহর প্রেমে জাগে, আল্লাহর মহব্বতে জাগে, তখন আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সাথে এই বান্দাকে নিয়ে গৌরব করেন, ফখর করেন। আমার বান্দা। এত ক্লান্তির পরে তার ঘুম, এত আরামের ঘুম শুধু আমার মহব্বতে, আমার ভয়ে, আমার কথা মনে করে সে উঠে পড়েছে। এরপর যখন সে ওযু করে আর দুই রাকাত নামায পড়ে, আল্লাহ তা’আলা তার পিছনের সব গুনাহ মাফ করে দেন। বান্দা এখন ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল। তাহাজ্জুদের নামায মৌলিকভাবে ফরয ছিল। সাহাবায়ে কেরাম এক বছর পর্যন্ত ফরয হিসেবেই আদায় করেছেন। ওলামায়ে কেরাম বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা জিন্দেগীতে ফরয হিসেবে তা আদায় করেছেন। আমাদের জন্য এটা আল্লাহ শিথিল করলেন। দারুণ কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল সাহাবায়ে কেরামের, তবুও তারা আমল করেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা তো কষ্ট দেখেন। আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ, আমি জানি তোমাদের মধ্যে অনেকেই আছে অসুস্থ, – তোমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের কাজ-কাম করতে হয়, তোমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে গেছে, তোমাদের মধ্যে অনেকেই যারা রুজি-রোজগারের তালাশে থাক। তাই আমি তোমাদের জন্য সহজ করে দিলাম। সহজ করে দিলেও, ফরয না থাকলেও, ফরয আদায় করার যে সওয়াব সে সওয়াব আল্লাহ তা’আলা বান্দার আমলনামায় দিয়ে দেন। তোমরা করবে সুন্নাত হিসেবে আমল, আমি তার সওয়াব দিব ফরয হিসেবে। আল্লাহর কাছে সওয়াবের কোনো কমতি নেই- আল্লাহ যখন খুশি হয়ে যান, রাজী হয়ে যান তখন বান্দাকেও তিনি খুশি করে দেন।

তাহাজ্জুদের নামায মৌলিকভাবে ফরয ছিল। সাহাবায়ে কেরাম এক বছর পর্যন্ত ফরয হিসেবেই আদায় করেছেন। ওলামায়ে কেরাম বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা জিন্দেগীতে ফরয হিসেবে তা আদায় করেছেন। আমাদের জন্য এটা আল্লাহ শিথিল করলেন। দারুণ কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল সাহাবায়ে কেরামের, তবুও তারা আমল করেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা তো কষ্ট দেখেন।

ঠিক, এমনিভাবে বান্দা যখন রোযা রাখে আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদেরকে ঘোষণা দিয়ে দেন, এ তো আমার মতো! আমি খাই না, আমি পান করি না, আমার কোনো যৌন আকাঙ্ক্ষা নেই। আমার বান্দাও এর জন্য মশ্‌ক করেছে। সে-ও সারা দিন খায়নি, সেও সারাদিন যৌন তাড়নায় পরাভূত হয়ে যায়নি, সে-ও সারা দিন পান করেনি, সে আমার জন্য রোযা রেখেছে। চল, আমার বান্দাকে আমার সিফাত দিয়ে আমার গুণ দিয়ে, আমি তাকে ভরপুর করে দিলাম।

আরও পড়ুন: ওহে রমাযান 

আল্লাহর কাছে নামায না পড়া, অপ্রিয় জিনিস, রোযা না রাখা অপ্রিয় জিনিস, মিথ্যা কথা বলা অপ্রিয় জিনিস। অনেক অপ্রিয় জিনিস আল্লাহ তা’আলার কাছে আছে। যত হারাম আছে সব হলো আল্লাহ তা’আলার কাছে অপ্রিয় জিনিস। সব অপ্রিয়র মাঝে আল্লাহর কাছে বড় অপ্রিয় জিনিস হলো বান্দা যখন আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কারো কাছে ঘোরাঘুরি করে। এটা আল্লাহর কাছে সহ্য হয় না। এটা আল্লাহ তা’আলা কোনো রকমেই সহ্য করেন না যে, আমাকে বাদ দিলো। দেনেওয়ালা আমি, বিপদ দূর করনেওয়ালা আমি, সব আমি। আমি তার সব কিছু করি, এই মুহূর্তে আমি তাকে বাঁচিয়ে রেখেছি, এর পরেও সে অন্যের কাছে হাত পাতবে। কী বলেন, বাপকে রেখে যদি বাপের দুশমনের কাছে গিয়ে একজনে ঈদের কাপড় চায়! এই ছেলের প্রতি বাবা কতটা গায়রতমন্দ হবে? আমার ইজ্জত নষ্ট করলি তুই! গেলি তো গেলি- গাধা মার্কা! গেলি আমার দুশমনের কাছে! তুইও আমার দুশমন। আমার ইজ্জতকে তুই ভূলুণ্ঠিত করেছিস, আমার ইজ্জতকে নষ্ট করেছিস। সে- ও তার মতো একটা মানুষই। এর চেয়ে আল্লাহ তা’আলার গায়রত তো আরো বেশি। তিনি বলেন, তুই আমার ইজ্জতকে নষ্ট করলি! আমার কাছে না চেয়ে আমার মুখাপেক্ষী না হয়ে তুই গিয়ে তোর মতোই আরেক বেটার কাছে তোর মতোই আরেকটা ফকির, ওর কাছেই তুই মুখাপেক্ষী হয়েছিস। তুই আমার ইজ্জত নষ্ট করেছিস। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাহাজ্জুদ গোজার হওয়ার তৌফিক দিন। রোযাগুলো আমলে আমলে কাটানোর তৌফিক দিন। আমীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *