লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব

লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব

মুফতি রিয়াজুল ইসলাম : পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিস দ্বারা লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণিত। সংশয় সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।

এ সম্মানিত রজনীর গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’য়ালা কদর নামে  একটি সূরা অবতীর্ণ করেছেন।

১. নিশ্চয়ই আমি এটি( আল কুরআন) নাযিল করেছি লাইলাতুল কদরে। ২. তোমাকে কিসে জানাবে লাইলাতুল কদর কি? ৩. লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। ৪. সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাঁদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। ৫. শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।” [সূরা আল কদর, ৯৭: ১-৫]

সূরা কদরের শানে নুযূল : ইবনে আবী হাতেম (রাঃ)-এর রেওয়ায়েতে আছে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) একবার বনী-ইসরাঈলের জনৈক মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। সে এক হাজার মাস পর্যন্ত অবিরাম জিহাদে মশগুল থাকে এবং কখনও অস্ত্র সংবরণ করেনি। মুসলমানগণ একথা শুনে বিস্মিত হলে সূরা কদর অবতীর্ণ হয়। এতে এ উম্মতের জন্য শুধু এক রাত্রির ইবাদতই সে মুজাহিদের এক হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা  শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করা হয়েছে। ইবনে জারীর (রহঃ) অপর একটি ঘটনা এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, বনী-ইসরাঈলের জনৈক ইবাদতকারী ব্যক্তি সারারাত  ইবাদতে মশগুল থাকত ও সকাল হতেই জিহাদের জন্যে বের হয়ে যেত এবং সারাদিন জিহাদে লিপ্ত থাকত। সে এক হাজার মাস এভাবে কাটিয়ে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আল্লাহ্‌ তাআলা সূরা-কদর নাযিল করে এ উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন। এ থেকে আরও প্রতীয়মান হয় যে, শবে-কদর উম্মতে মুহাম্মদীরই বৈশিষ্ট্য।

আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে এবং প্রতিদানের আশায় লাইলাতুল কদরে নামায পড়বে তাঁর অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।”[সহীহ বুখারী (১৯০১) ও মুসলিম (৭৬০)] হাদিসে “ঈমান সহকারে” কথাটির অর্থ হচ্ছে- এই রাতের মর্যাদা ও বিশেষ আমল শরিয়তসম্মত হওয়ার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। আর “প্রতিদানের আশায়” কথাটির অর্থ হচ্ছে- নিয়্যতকে আল্লাহ তাআলার জন্য একনিষ্ঠ করা।

উম্মতের ঐক্যমত হল এই রাত রমজান মাসের কোনও এক রাত।

এই রাত রমজানের কোন তারিখে? রাসূলুল্লাহ সা: একটি রহস্যময় কারণে তারিখটি সুনির্দিষ্ট করেননি। ইমাম বুখারি, ইমাম মুসলিম, ইমাম আহমদ ও ইমাম তিরমিজি কর্তৃক বর্র্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে- হজরত আয়েশা রা: বর্ণনা করেছেন, নবী করিম সা: বলেছেন, ‘কদরের রাতকে রমজানের শেষ দশ রাতের কোন বেজোড় রাতে খোঁজ কর।’ হজরত আবু বকর রা: ও হজরত আবব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত হাদিস থেকেও এই একই ধরনের তথ্য পাওয়া যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *