‘শরণার্থী সঙ্কট সমাধানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া গুরুত্বপূর্ণ’

‘শরণার্থী সঙ্কট সমাধানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া গুরুত্বপূর্ণ’

পাথেয় ডেস্ক : রোহিঙ্গা সঙ্কট চিরতরে সমাধানের লক্ষ্যে বৈষম্যমূলক আইনের বিলোপ, নীতিমালা এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধসহ তিন দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শরণার্থী সঙ্কট সমাধানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  সোমবার শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক প্রভাব শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগদান করে রোহিঙ্গা সংকট চিরতরে সমাধানের লক্ষ্যে তিনি এই সুপারিশ করেন।

প্রথম সুপারিশ : এই সুপারিশে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই বৈষম্যমূলক আইন ও নীতি বিলোপ, এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধ ও তাদের সে দেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে।

দ্বিতীয় সুপারিশ : প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার অবশ্যই সকল রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব প্রদানের সঠিক উপায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় মিয়ানমারের ভেতরে ‘সেফ জোন’ তৈরি করতে হবে।

তৃতীয় সুপারিশ : এ সুপারিশে বাংলাদেশ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৈরাজ্য রোধে অপরাধীদের জবাবদিহি, বিচার, বিশেষ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশমালার আলোকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেজের উপস্থিতিতে জাতিসংঘের সদর দফতরে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার ‘শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক প্রভাবের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ‘এ মডেল ফর গ্রেটার সলিডারিটি এন্ড কো-অপারেশন’ শীর্ষক এ বৈঠকের আয়োজন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি, যা আমাদের জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা তাদের জন্য ৬ হাজার একরের বেশি জমি বরাদ্দ দিয়েছি।তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক ও অন্যান্য সম্পদ, সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতি আন্তর্জাতিক অংশীদার, বিশেষ করে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সাহায্য দিয়ে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ামার সরকারই তৈরি করেছে এবং মিয়ানমারকে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে আমরা মিয়ামার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য আমরা আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছি। এটা করে আমরা শুধু তাদের জীবন রক্ষা করিনি বরং আমরা আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত করে পুরো অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া দেখতে চায়। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত না নেয়া পর্যন্ত আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা ভাষানচর নামক একটি দ্বীপের ব্যাপক উন্নয়ন করে রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করবো, যাতে তারা ওই দ্বীপে উন্নত জীবনযাপন ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে।’

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কম্প্যাক্ট অন রিফিউজি’ এমন সময় গ্রহণ করা হলো যখন সারা বিশ্ব মারাত্মক শরণার্থী সংকট মোকাবেলা করছে। যেসব দেশ শরণার্থীদের বোঝা কাঁধে নেয় বিশ্বের উচিত তাদের এ অবদানকে স্বীকৃতি দেয়া এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অবশ্যই রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *