শান্তি বিনষ্টে পার্বত্য এলাকায় এখনো ষড়যন্ত্র হয় : তথ্যমন্ত্রী

শান্তি বিনষ্টে পার্বত্য এলাকায় এখনো ষড়যন্ত্র হয় : তথ্যমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পুরো দেশের শান্তি বিনষ্ট করার জন্য যেমন ষড়যন্ত্র হয়, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম ও এই এলাকার শান্তি নিয়ে ষড়যন্ত্র হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন ও শান্তিতে যারা খুশি নয়, পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়ন, স্থিতি এবং শান্তিতেও তারা খুশি নয়। সেই কারণে তারা নানা ষড়যন্ত্র করেন এবং সেটির বহিঃপ্রকাশ আমরা মাঝেমধ্যে দেখতে পাই। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুর ডি সিএইচটি মাউন্টেন বাইক’ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে পূর্ববর্তী সরকার বিশেষ করে যখন বিএনপি ও এরশাদ ক্ষমতায় ছিল প্রকৃতপক্ষে তখন শান্তিচুক্তি করা ও বাস্তবায়নের জন্য হাতও দেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শান্তিচুক্তি করেছেন এবং সেটি বাস্তবায়ন করে চলেছেন। বহু শরণার্থী যারা এখানে অশান্তির কারণে দেশত্যাগী হয়েছিল তাদেরকে ফিরিয়ে এনেছেন। যারা ভিন্নপথে গিয়েছিল তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। এটি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে সম্ভবপর হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সফিকুল আহম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, মহিলা এমপি বাসন্তি চাকমা, ব্রিগেড কমান্ডার ফয়েজুর রহমান, দিঘীনালা উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম প্রমুখ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম বদলে গেছে। বাংলাদেশের অন্য এলাকার চেয়ে পার্বত্যাঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া প্রকৃতপক্ষে অনেক বেশি। কারণ এখানে সরকার অধিক মনযোগী। এর ফলে তিন পার্বত্য জেলার চিত্র বদলে গেছে। এখানে মানুষের যে উন্নয়ন হয়েছে এটি সম্ভবপর হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি করা ও তার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এখানে শান্তি স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলসহ পুরো চট্টগ্রামে ট্যুরিজমের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই সাইক্লিং ট্যুরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাম এবং এখানকার ট্যুরিজমের যে সম্ভাবনা রয়েছে সেটা সমগ্র বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। পৃথিবীর অনেক দেশ ট্যুরিজমকে কাজে লাগিয়ে তাদের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। আমাদের দেশে ট্যুরিজমের যে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে তা যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি তাহলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। সেজন্য প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন। সেটি আমাদের সরকার অনেক করেছেন। শান্তি স্থিতিও প্রয়োজন, সমস্ত কিছু মিলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাজেকে অপরিকল্পিতভাবে যেভাবে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি হচ্ছে, যেভাবে পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে, এটি সঠিক নয়। এটাকে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার জন্য আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি, কিছুদিনের মধ্যে এটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করারলক্ষ্যে একটি কমিটি বা এজাতিয় কিছু একটা করে দিয়ে সেটির মাধ্যমে এটার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে।

করোনাভাইরাসের মধ্যেও যখন সমস্তকিছু স্তব্দ, তখন মুজিব শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে মাউন্টেন বাইকিংয়ের আয়োজনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অপরূপ শোভায় শোভিত সাজেক ভ্যালি, পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশ অপরূপ শোভায় শোভিত। এখানে সাইক্লিং করার যে তৃপ্তি, যারা সাইক্লিং করেন তারা ছাড়া অন্যকেউ বলতে পারবেনা। আমি ছাত্রজীবনে নিজেও সাইকেল চালিয়ে ইউনিভার্সিটি যাওয়া আসা করতাম। সে কারণে আমি নিজেও সাইক্লিংয়ের ভক্ত, ঢাকা শহরে নানা দাবীতে ও পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন সাইকেল র‌্যালীতে আমি নিয়মিত অংশগ্রহণ করি।

তিনি বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮’শ ফুট উপরের সাজেক থেকে রওনা দিয়ে পুরো উচুনিচু ৩’শ কিলোমিটার পাহাড় পাড়ি দিয়ে তারা থানচি পৌঁছাবেন, এটি চাট্টিখানি কথা নয়, মাউন্টেন সাইক্লিং এটি যে কেউ পারেনা। আমি আনন্দিত হয়েছি এই প্রতিযোগীতায় প্রায় ৭’শ জন আবেদন করেছিল তৎমধ্যে ফাইনালি নেয়া হয়েছে ৫৫ জনকে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বাংলাদেশের তরুণদের যদি আমরা গড়ে তুলতে চাই, তাহলে ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ সাইক্লিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তি ও মাদকের হিংস্র থাবা থেকে তরুণদের বের করে আনার জন্য ব্যাপক আকারে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাইক্লিং ট্যুরসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আয়োজন করার কোনো বিকল্প নাই।

/এএ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *