সরকারের দুর্নীতির কথা বললে গ্রেফতার করা হচ্ছে : রিজভী

সরকারের দুর্নীতির কথা বললে গ্রেফতার করা হচ্ছে : রিজভী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কথা বললে গ্রেফতার করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১৯ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, করোনাভাইরাস আতঙ্কে মানুষের দিন কাটছে। মানুষ বিপর্যস্ত ও আতঙ্কিত। করোনা ভীতিতে আচ্ছন্ন দেশের জনগণ। মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে প্রতিদিন। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল অবস্থায় জনমনে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা সারাবিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। ল্যাবে নমুনার স্তুপ জমা হয়ে আছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের বর্তমান দুর্দশায় প্রমাণিত হয়েছে, এই সরকার জনগণের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে ধাপ্পাবাজি করেছে। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৭টি জেলাতেই আইসিইউ নেই।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময়ে মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্বাস্থ্যখাতের বিপন্ন ও ভঙ্গুর ছবি প্রকাশ হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ এপ্রিল শনিবার জাতীয় সংসদে বলেছেন, ‘প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) স্থাপন করা হবে’। আওয়ামী সরকারের বারবার একইরকম প্রতিশ্রুতি ‘কাজীর গরু কেতাবেই থাকছে, গোয়ালে নেই’- এর মতো। বিরোধী দল, স্বাধীন চিন্তা ও মতের মানুষদেরকে হেনস্তা আর হয়রানির গতি এই করোনাকালেও আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়ে গেছে, এই সরকারের হাতে মানুষের জানমাল নিরাপদ নয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে গত এক দশক ক্ষমতাসীন সরকার জনগণকে কথিত উন্নয়নের গল্প শুনিয়েছে। অথচ নির্মম বাস্তবতা হলো, উন্নয়নেরে স্লোগানের আড়ালে গত একদশকে দেশে দুর্নীতির-অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। এই করোনার প্রকোপের মধ্যেও সরকার দুর্নীতির সংবাদ আড়াল করার জন্য প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরকে ডেকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করছে। বিরোধী দল ও গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপর তাদের প্রণীত সকল কালাকানুন নির্বিচারে প্রয়োগ করছে।

রিজভী বলেন, কেউ আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা আর দুর্নীতির কথা মনে করিয়ে দিলে তাকে তাড়াহুড়ো করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গুম করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করার কারণে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজনকে চাকরিচ্যুৎ করা হয়েছে। বিএনপি ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো ‘ব্ল্যাক ল’ প্রয়োগের মাধ্যমে গুম, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতার এখন মহামারি করোনাভাইরাসের তাণ্ডবের মধ্যেও নিত্যদিনের ঘটনা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *