সামাজিক দূরত্ব না মানার অডিও ক্লিপ সাদ কান্ধলবীর নয়, ফেক

সামাজিক দূরত্ব না মানার অডিও ক্লিপ সাদ কান্ধলবীর নয়, ফেক

সামাজিক দূরত্ব না মানার অডিও ক্লিপ সাদ কান্ধলবীর নয়, ফেক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সামাজিক দূরত্ব না মানার ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপ দিল্লির নিজামুদ্দিন তাবলীগ মারকাজের আমীর মাওলানা সাদ কান্ধলবীর নয়। একটি মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লীর পুলিশ। সামাজিক দূরত্ব না মানার এমন কোনো অডিও বার্তা দেননি দিল্লির নিজামুদ্দিন তাবলীগ মারকাজের আমীর মাওলানা সাদ কান্ধলবী।

সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে অনুষ্ঠিত তাবলিগ জামাতের ধর্মীয় জমায়েত থেকে করোনা ছড়ানোয় ভারতজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। তাবলিগ প্রধান মাওলানা সাদ অনুসারীদের সামাজিক দূরত্ব না মানার কথা বলছেন এমন একটি অডিও ক্লিপ সে সময় ফাঁস হওয়ায় বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। তবে এতোদিন পরে দিল্লি পুলিশ বলছে মাওলানা সাদের নামে যে অডিও ক্লিপটি মিডিয়া প্রচার করেছিল তা ভুয়া (ফেক) এবং এডিট করা।

দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখার দাবি, মওলানা সাদের নামে প্রচারিত বেশ কয়েকটি অডিও ফাইলের ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা।

গত ১ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে তাবলিগ জামাতের একটি ধর্মীয় সমাবেশ শুরু হয়। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ২৪ মার্চ ভারত জুড়ে লকডাউন শুরুর সময়ও সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রায় দেড় হাজার মানুষের অবস্থান ছিলো। নিজামুদ্দিন মারকাজে অবস্থানরতদের অনেকের শরীরে করো নাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর মওলানা সাদসহ তাবলিগ নেতাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অমান্যের অভিযোগে মামলাও হয়।

মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে পুলিশের এফআইআর-এ কিছু অডিও ক্লিপের উল্লেখ ছিল। বলা হয়েছিল, ওইসব ক্লিপের মাধ্যমে তিনি তাবলিগ জামাত সদস্যদের সামাজিক দূরত্বের নিয়ম এবং নিষেধাজ্ঞার আদেশ অনুসরণ না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এছাড়াও তার নামে বেশ কয়েকটি অডিও ফাইল ব্যবহার করে একসাথে যোগ করা হয়েছে। পুলিশ সমস্ত অডিও ক্লিপকে একটি ফরেনসিক বিজ্ঞান পরীক্ষাগারে প্রেরণ করে। তাতে যে রিপোর্ট আসে সেখান থেকে জানা যায় যে সেই অডিও ক্লিপ এডিট করা এবং ফেক।

অভিযোগ অনুযায়ী, ২১ মার্চ হোয়াটসঅ্যাপে মাওলানা সাদের একটি অডিও রেকর্ডিং পাওয়া গিয়েছিল, যেখানে বক্তাকে তার অনুসারীদের লকডাউন ও সামাজিক দূরত্বকে অস্বীকার করা, এবং মার্কাজের ধর্মীয় সমাবেশে অংশ নেয়া কথা বলতে দেখা গেছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ মারকাজ সদস্যের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে যেটাতে তাদের অডিও ক্লিপগুলো রাখা হয়েছিল। সেগুলো স্ক্যান করার পরে পুলিশ দেখতে পেয়েছে যে তিনটি ফর্মের মধ্যে ৩৫০টিরও বেশি অডিও ক্লিপ রয়েছে। মার্কাজ থেকে ক্লিপগুলো তাদের অনুগামীদের পাঠানো হয় এবং তাদের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছে।

পরিদর্শক সতীশ কুমারের নেতৃত্বে একটি দল এফআইআর-এ উল্লেখ করা নির্দিষ্ট অডিওগুলো সন্ধানের চেষ্টা করছে। তবে তারা এখন পর্যন্ত ল্যাপটপ থেকে এ জাতীয় কোনো ক্লিপ উদ্ধার করতে পারেনি যেগুলো সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং না মানার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে, তদন্তকারীরা দেখতে পেয়েছেন যে অন্যান্য ঘটনা থেকে পুলিশ এবং ধর্ম সম্পর্কে মাওলানা সাদের মন্তব্যগুলো প্রসঙ্গের বাইরে। তদন্তকারী দলটি লক্ষ্য করেছে যে ভাইরাল অডিওটি বেশ কয়েকটি ক্লিপের মিশ্রণ, যা মিথ্যা ভাবে তাদেরকে ফাঁসানোর জন্য এডিট করা হয়েছে।

সূত্র- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *