সালাফের রমযান।। পর্ব-৩ (সমাপ্ত)

সালাফের রমযান।। পর্ব-৩ (সমাপ্ত)

  • আব্দুস সালাম ইবন হাশিম

মহান সালাফের কাছে মাহে রমযান ছিলো পরম আরাধ্যের মাস। ফুলে ফুলে রাঙিয়ে উঠা বাগ-বাগিচা, নয়া পত্রপল্লবে হরিত হয়ে ওঠা মালঞ্চের মতোই রমযান এলে মহান সালাফগণ শোভিত হতেন ইবাদত বন্দেগীতে, নিজেদেরকে রাঙিয়ে নিতেন আল্লাহ ও লিল্লাহিওয়াতের রঙে। কিয়ামুল লাইল, সিয়ামুন নাহার, তিলাওয়াতুল কুরআন, আযকার, আদঈয়া, সাদাকাত ও ইনাবাত ইলাল্লাহের এক স্বর্গীয় বাসন্তী জীবনে তারা বিলোল হতেন একটি মাসের জন্য। দান সদাকায় তাঁদের আগ্রহ ও উদ্দীপনা ও আমল কেমন ছিলো তা জানবো আজকের এই পর্বে।

দান- দাক্ষিণ্যে সালাফ

সালাফের দান ছিলো নবীজী সা. এর দাক্ষিণ্যেরই প্রতিচ্ছবি। নবীজী ছিলেন সৃষ্টিজগতের সর্বাধিক ঔদার্যময়। রমযানে তিনি সর্বাধিক দিলদরিয়াময় হয়ে উঠতেন । অবাধ সমীরণের চাইতেও তাঁর দানের বেগ ছিলো গতিময়। ঠিক সালাফগণও রমযান এলে সাধ্যের সর্বোচ্চটুকু দান করতেন। তাবেঈ হাম্মাদ ইবনে আবী সুলাইমান প্রতিদিন পাঁচশ’জন রোযাদারকে ইফতার করাতেন। চাঁদরাতে সবাইকে নতুন জামা কাপড় উপহার দিতেন। সাথে প্রত্যেককে একশ রৌপ্যমুদ্রা বখশিশ দিতেন। ইবনে উমার রাযি. সদা মিসকীনদের সাথে নিয়ে ইফতার করতেন। খাওয়ার সময় কোনো ভিক্ষুক এলে নিজের অংশটুকু তাকে দিয়ে দিতেন।

মুহাদ্দিস ইবনু শিহাব যুহরি রমযানে দুটি কাজ খুব বেশী করতেন, কুরআন তেলাওয়াত ও রোযাদারদের খাবার খাওয়ানো।

ইমাম শাফেঈ বলতেন, রমযানে লোকেরা বেশী বেশী দান সদকাহ করুক এটা আমি পছন্দ করি। এটাই রাসূল সা. এর সুন্নাহ। কারণ, রমযানে মানুষের প্রয়োজনটা বেশী দেখা দেয়। রোযা ও ইবাদাতে ব্যাস্ত থাকার দরুণ তারা আয় আয় রোযগার তেমন একটা করতে পারে না।

হাসান বসরী ও আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রমযানে নিজেরা অভুক্ত থেকেও অন্যকে আহার করাতেন।

সালাফের এই চমৎকার গুন ও বৈশিষ্টগুলো আমরাও নিজেদের মাঝেও প্রতিফলিত হোক। আমরাও যেনো দৃপ্ত হই তাঁদের ঈমান ও আমলের আলোয়।

আরও পড়ুন:-
সালাফের রমযান ।। পর্ব-১
সালাফের রমযান ।। পর্ব-২

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *