সুইডেনে কোরআন পোড়ানো নিয়ে জাতিসংঘে বিশেষ বৈঠক

সুইডেনে কোরআন পোড়ানো নিয়ে জাতিসংঘে বিশেষ বৈঠক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সম্প্রতি সুইডেনে একটি মসজিদের সামনে কোরআন পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে একদল আন্দোলনকারী। অভিযোগ রয়েছে, সুইডেনের প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ওই ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। মুসলিম বিশ্বের একাধিক দেশ ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়।

সুইডেনের ঘটনার উল্লেখ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে বিশেষ আলোচনার দাবি জানিয়েছিল পাকিস্তান। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) থেকে সেই আলোচনা শুরু হয়েছে।

বৈঠকে মুসলিম নেতারা বলেন, কোরআন মুসলমানদের কাছে একটি আবেগের বিষয়। কোরআন পোড়ানো মুসলিমদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে। ফলে এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাল ভুট্টো জারদারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এরই বৈঠকে যোগ দেন। তিনি বলেন, ”এই ধরনের ঘটনা ইসলামোফোবিয়া, হেট স্পিচ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে মানুষে মানুষে ব্যবধান আরও বাড়ছে। সহিংসতা উসকে দেওয়া হচ্ছে।”

বৈঠকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠন ইউএনএইচসিআর-এর প্রধান ভলকার টার্ক বলেন, ”মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ, ইসলামোফোবিয়া, ইহুদিবিদ্বেষ, খ্রিস্টানদের নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। একইভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন আহামেদি, ইয়াজেদি, বাহাইদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ অন্যায়। এই সবকিছুই অন্যায় এবং বন্ধ করা প্রয়োজন।”

আলোচনা, শিক্ষা এবং ধর্মীয় আদানপ্রদানের মাধ্যমে হেটস্পিচ বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন টার্ক। এর জন্য সমস্ত দেশকে এগিয়ে আসতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তার মতে, কোরআন জ্বালানোর ঘটনা সার্বিকভাবে বিদ্বেষ তৈরি করেছে, সহিংসতার জন্ম দিয়েছে এবং মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে। এধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত, যা বন্ধ হওয়া দরকার।

সুইডেনের দক্ষিণপন্থি সরকারও মনে করে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা অনভিপ্রেত। তবে তাদের বক্তব্য, সংবিধান সকলকে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার দিয়েছে। কোরআন পুড়িয়ে যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তাদেরও সাংবিধানিক অধিকার আছে। সেকারণেই তাদের বাধা দেওয়া হয়নি।

মুসলিম বিশ্বের দাবি, এই ঘটনা তাদের বিশ্বাসের ওপর আঘাত। একেও এক ধরনের ইসলামোফোবিয়া বলা যেতে পারে। এনিয়ে মুসলিম দেশগুলির মঞ্চেও আলোচনা হয়েছে। টার্কও মনে করেন, কোরআন পোড়ানোর ঘটনা কেবলমাত্র ব্যক্তি অধিকার নয়। ব্যক্তির অধিকার কতদূর পর্যন্ত মেনে নেওয়া হবে এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।

আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এই বৈঠক চলবে। অন্য দেশগুলোও সেখানে তাদের বক্তব্য জানাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *