সোমবার থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন

সোমবার থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে সারাদেশে ৭ দিন কঠোর লকডাউন পালন করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার।

শুক্রবার (২৫ জুন) রাতে গণমাধ্যমেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার।

তিনি জানান, এসময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

এ নিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধকলপে আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে ৭ দিন সারাদেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এসময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন শুধু চলাচল করতে পারবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না।

এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আদেশ শনিবার (২৬ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে বলে জানান সুরথ কুমার সরকার।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. শহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়, সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।

বুধবার (২৩ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩৮তম সভা থেকে এ সুপারিশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ৩৮তম সভায় দেশে কোভিড-১৯ রোগের সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আলোচনা হয়।

এতে আরও বলা হয়, কোভিড রোগের বিশেষ ডেলটা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতোমধ্যেই রোগের প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ডভাবে গৃহীত কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী যে সব স্থানে পূর্ণ ‘শাটডাউন’ প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করছে। জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।

পরামর্শক কমিটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য সভায় তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ রোগ থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য ৮০ শতাংশের ঊর্ধ্বে মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন। বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন করা ও নিজস্ব ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটি পূর্ণ সমর্থন জানায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *