পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দক্ষিণ আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সোমালিয়ায় মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। মার্কিন সেনাবাহিনীর দাবি, নিহতরা সবাই জঙ্গিগোষ্ঠী আলশাবাবের সদস্য। খবর গার্ডিয়ানের।
গার্ডিয়ান জানায়, সোমালিয়ার সরকারি বাহিনীর ওপর হামলার জবাবে মার্কিন সেনাবাহিনী এ হামলা চালায়। ওই হামলায় আল শাবাবের ৫২ চরমপন্থী নিহত হয়েছে।
শনিবার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকালে আল-শাবাবের চালানো হামলায় সোমালিয়ার কমপক্ষে আট সেনা সদস্য নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে একইদিন বিকালে এ পাল্টা হামলাটি চালানো হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনীর দেওয়া বিবৃতির বরাতে এক প্রতিবেদনে এ হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাও।
আলশাবাবের নিয়ন্ত্রণে দেশটির রাজধানী মোগাদিসুসহ দক্ষিণ ও মধ্য সোমালিয়ার বিশাল একটি অংশ রয়েছে। তারা দাবি করছে, মঙ্গলবার কেনিয়ার একটি বিলাসবহুল হোটেলে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ করেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর আফ্রিকা কমান্ডের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সোমালিয়ার জুবা অঞ্চলের জিলিবে এ হামলাটি হয়েছে। মূলত এতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।’
এ দিকে জুবার আঞ্চলিক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আব্দুর রশিদ হাসান রাষ্ট্রীয় বেতার রেডিও মোগাদিসুকে বলেন, ‘এ হামলায় আল-শাবাব জঙ্গিদের হতাহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৭৩ ছড়িয়ে যেতে পারে।’ অপরদিকে নিহতের সংখ্যা নিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী আল-শাবাবের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার দিন সকালে ভারী অস্ত্রসহ নিয়ে সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় জঙ্গি গোষ্ঠী আল-শাবাব। সে সময় বেশ কয়েক ঘণ্টা যাবত চলে তাদের মধ্যে এ বন্দুকযুদ্ধ। অবশ্য আল-শাবাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এ ঘটনায় সোমালিয়া সেনাবাহিনীর অন্তত আট সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আলশাবাবের হামলায় ১৫ সোমালীয় সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে সংবাদ সংস্থা শাহাদার কাছে আলশাবাব জানায়, তাদের অতর্কিত হামলায় সোমালীয় সেনাবাহিনীর দুটি ঘাঁটিতে অন্তত সোমালিয়ার ৪১ সেনা নিহত হয়েছে। কিসমাও পোর্ট শহর এলাকার কাছে বার সানজুনি এলাকায় এ হামলা সংগঠিত হয়। এনিয়ে তাৎক্ষণিক সোমালিয়া সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।
পার্শ্ববর্তী দেশ ইথিওপিয়া রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানায়, আল শাবাবের ৬০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এছাড়া বিস্ফোরণ বোঝাই চারটি যান ধ্বংস হয়েছে।
বহুজাতিক আফ্রিকান ইউনিয়ন শান্তিরক্ষা মিশনে ইথিওপিয়া তাদের সেনাবাহিনী দিয়েছে। যারা ইথিওপীয় সেনা কমান্ডের অধীনে স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
সোমালিয়ার ক্ষমতাসীন সরকার আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট। কিন্তু এই সরকারকে হটাতে সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত আল-শাবাব। দীর্ঘ বছর ধরে চলে আসা এই সংঘাত থামাতে সেখানে নিয়োজিত রয়েছে ইথিওপিয়াসহ আফ্রিকান অঞ্চলের অনেক মিত্র রাষ্ট্রের বাহিনী।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের পর দেশটিতে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর অতিরিক্ত পাঁচ শতাধিক সেনাসদস্যকে সোমালিয়ায় সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য পাঠানো হয়।